সমুদ্র অর্থনীতি বদলে দিতে পারে বাংলাদেশকে (ভিডিও)
মফিউর রহমান
প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ৮ জুলাই ২০২৩ শনিবার
সমুদ্র অর্থনীতি বদলে দিতে পারে বাংলাদেশকে। সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জিডিপিতে ৩ শতাংশ অবদান রাখতে পারে ব্লু-ইকোনমি। প্রবৃদ্ধি ছাড়াতে পারে ১০ শতাংশ। জ্বালানি সম্পদ, মাছ ও লবণে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পাশাপাশি পর্যটন ঘিরে হতে পারে বহু কর্মসংস্থান।
সমুদ্র অঞ্চলের অধিকারি বিশ্বের সব দেশই সমৃদ্ধ হচ্ছে ব্লু-ইকোনমিকে কাজে লাগিয়ে। বিশাল সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকেও। বঙ্গোপসাগরের সুনীল জলে ও তলে লুকিয়ে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা।
তবে দেড়িতে হলেও সুনীল অর্থনীতি কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মৎস্য আহরণ বৃদ্ধি, জাহাজ ব্যবস্থাপনা, বন্দর এবং সামুদ্রিক অর্থনৈতিক সহায়ক পরিসেবা, সামুদ্রিক জৈব প্রযুক্তি, খনিজ পদার্থ, নবায়নযোগ্য শক্তি, সামুদ্রিক পণ্য, সামুদ্রিক পর্যটন ও অবকাশ, সামুদ্রিক স্থাপনা নির্মাণ, সামুদ্রিক বাণিজ্য, সামুদ্রিক তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং শিক্ষা-গবেষণা নিয়ে কাজ চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু তেল-গ্যাস বা মাছ নয়, মূল্যবান বহু সম্পদের আধার বঙ্গোপসাগর।
ঢাবি মৎস বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রোকনুজ্জামান বলেন, “১০ বছর চলে গেল সমুদ্র বিজয়ের কিন্তু এটিকে গবেষণা করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যে ব্যবস্থাপনাগুলো আছে সেগুলো আমরা আনতে পারিনি। ফলে সমুদ্রে কতটুকু স্টক আছে তা আমরা জানতে পারছিনা। যখন স্টক জানা নাই তখন পরবর্তী জায়গায় যাওয়াটা কঠিন। আমরা কতটুকু আহরণ করবো, কতটুকু করবোনা।”
সমুদ্রকে ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির জিডিপিতে বøু-ইকোনোমির অবদান ৩ শতাংশের বেশি। ২০২৫ সালেই সুনীল অর্থনীতির আকার ১শ’ বিলিয়ন ডলার করতে চায় অস্ট্রেলিয়া।
সমুদ্র অর্থনীতি ব্যবহার করে এগিয়ে যাচ্ছে চীনও। দেশটিতে গেল ৫ বছরে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন মেরিটাইম অর্থনীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশটির জিডিপির ১০ শতাংশ। ২০৩৫ সাল নাগাদ ছাড়াবে ১৫ শতাংশ।
বসে নেই আয়ারল্যান্ড, মরিশাস, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মেরিটাইম অর্থনীতি এসব দেশের জিডিপি সমৃদ্ধ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রাঞ্চল বদলে দিতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিও। মাছ ও জ্বালানি সক্ষমতা অর্জনের সাথে সমুদ্র-যোগাযোগ ও পর্যটন শিল্প থেকে আসতে পারে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।
ড. রোকনুজ্জামান বলেন, “মাছের হিসাবে সাগরে ৪৭৫টি স্পেস আমাদের আছে। ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি পেয়ে থাকি, এধরনের বিভিন্ন প্রজাতির মাছও আমরা পেতে পারি। এই সম্ভাবনাকে আমাদের আয়ত্তে আনতে হবে।”
পোর্টল্যান্ড গ্রুপ প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, “এখন বাংলাদেশ নেভি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যৌথভাবে হয়তো এধরনের মৎস্য আহরণে যাবে। পাশাপাশি খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য যে রিসার্চ দরকার সেটা চলছে।”
সমুদ্রে সি-উইড জন্মে। এটির পরিকল্পিত উৎপাদন করা গেলে রপ্তানিও সম্ভব বলছেন তারা।
দেশের লবণের চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ করছে সাগরের পানি। গেল মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন।
এএইচ