পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ৯ জুলাই ২০২৩ রবিবার
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট ও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। তাদের দাবি একটাই, বেতন বৃদ্ধি। এসব চিকিৎসকরা আক্ষেপ করে বলেন, বছরের পর বছর মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বিনিময়ে পাচ্ছি মাত্র ২০ হাজার টাকা। যা দিয়ে জীবনযাপন করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
শনিবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে রাজধারীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মবিরতি পালন শুরু করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) অধীন পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকরা। আজ রোববার (৯ জুলাই) এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। দাবি মানা না পর্যন্ত কাজে ফিরে যাবেন না বলে জানান তারা।
‘পেটে ক্ষুধা নিয়ে সেবা দেব কীভাবে?’- এভাবেই বলে ওঠেন আন্দোলনরত চিকিৎসক ডা. বেনজির বেলাল খান।
তিনি বলেন, ট্রেইনি হিসেবে দুই বছর হয়ে গেছে। এই আন্দোলন চলছে তিন বছর ধরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ২০১২ সাল থেকে তাদের ভাতা দেওয়া শুরু করেন। তখন ভাতা দেওয়া হতো ১০ হাজার টাকা। সেটা ২০১৬ সালে ২০ হাজার করা হয়। এরপর বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও বাড়াচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে ২০ হাজার টাকা দিয়ে চলা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
আন্দোলনরত আরেক চিকিৎসক ডা. মো. ইব্রাহীম শুভ বলেন, আমাদের প্রত্যেকেরই পরিবার আছে। ২০ হাজার টাকায় কোনোভাবেই পরিবার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। একটা সভ্য দেশে ডাক্তার তখনই মাঠে নামেন যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। আমাদের পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠছে না ২০ হাজার টাকায় চলতে।
প্রাইভেট পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ট্রেইনি ডাক্তারদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ‘ন্যায্য দাবির’ বিষয়ে বারবার কর্তৃপক্ষ সমর্থন দিয়ে থাকলেও, তাদের আশ্বাস বরাবরের মতোই মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে বলে জানান কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকরা।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে ২০ হাজার টাকায় একজন ডাক্তার কীভাবে তার সংসার চালাতে পারেন–এমন প্রশ্ন তুলে আন্দোলনরত ডা. সালেহ বিন আমিন বলেন, ‘এই টাকা দিয়ে আমার সন্তানকে কীভাবে মানুষ করব? মা-বাবার চিকিৎসা ব্যয়ই বা কী দিয়ে করব। আমরা চাই না এই আন্দোলন করতে। আমরা দ্রুত রোগীদের সেবার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে চাই।’
আন্দোলনরত আরেক চিকিৎসক ডা. মো. ইব্রাহীম শুভ বলেন, ‘জীবনবাজি রেখে মানুষের জন্য সেবা দিয়ে যাই। ২০ হাজার টাকা দিয়ে কী হয়? অমানবিক পরিশ্রমের ন্যায্য মর্যাদা চাই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বিনীতভাবে আকুল আবেদন করছি, আমাদের এই সমস্যার দ্রুত সমাধানে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবেন।’
অবস্থান ধর্মঘটের শুরুতেই পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় সংগঠনের সভাপতি ডা. জাবিরসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সঙ্গে ছিলেন।
এমএম//