ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জনগণের সচেতনতাই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে: তাপস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৪৭ পিএম, ১২ জুলাই ২০২৩ বুধবার

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, জনগণের সচেতনতা এবং তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। 

আজ বুধবার পশ্চিম ধানমন্ডির মধুবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন,‘একটি উৎস থেকেই কিন্তু পুরো এলাকার সকলের জন্য জনস্বাস্থ্যের হুমকি তৈরি করতে পারে। একটি পাত্রে জমে থাকা পানির ভেতর প্রচুর পরিমাণে লার্ভা এবং মশা হওয়া সম্ভব। তাই প্রথমত আমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পানি জমে লার্ভা বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয় এরকম কোথাও কোন পরিত্যক্ত পাত্র বা সামগ্রী রাখা যাবে না। নিজেদের আঙিনা, স্থান ও স্থাপনা আমরা যদি পরিষ্কার রাখতে পারি-তাহলে আমরা অবশ্যই এই এডিস মশা এবং ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে পারব। ১০০ ভাগ নির্মূল করতে পারবো এটা আমরা বলি না, কিন্তু জনগণ সচেতন হলে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।’

এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে গৃহিত ও চলমান কার্যক্রম উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘যে বিষয়টি আমাদেরকে এখন সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সেটি হলো এডিস মশার বিস্তার। সে বিস্তারকে রোধ করতে এই মৌসুমে আমাদের যে চলমান অভিযান, সেই অভিযানের কার্যক্রম আজ আমি নিজেই সশরীরে তদারকি করছি। আজকে মধুবাজার এলাকায় আমাদের কর্মী ও কর্মকর্তারা ২৬টি ভবন পরিদর্শন করেছেন। আমি নিজে গিয়েও কয়েকটি পরিদর্শন করেছি। একটু উন্মুক্ত জমি সেখানে ভাড়াটিয়া কিছু ব্যক্তি থাকেন- সে জায়গায় তাদের একটি মাটির পাত্রে আমরা পানি এবং লার্ভা পেয়েছি। তাদেরকে সচেতন করার জন্য আমরা কথা বলেছি এবং সেটা আমরা ধ্বংস করেছি, নির্মূল করেছি। এভাবেই আমরা চেষ্টা করছি- যেখানেই লার্ভা হওয়ার শঙ্কা  রয়েছে, পানি জমে থাকার শঙ্কা  রয়েছে সেসব জায়গা আমরা ধ্বংস করছি, নির্মূল করছি। লার্ভিসাইডিং করছি এবং বিকেলে আবার ফগিং করা হচ্ছে। যাতে করে উন্মুক্ত মশাগুলো নিধন করা যেতে পারে। এভাবেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৭৫টি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে।’ 

শুধু চিরুনি অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে নয় সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। আমরা এই পর্যন্ত (গত ১৮ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত) ২ হাজার ১৩৩টি স্থাপনা, হোল্ডিং, বাসা-বাড়িতে কর্মীরা গিয়েছে (ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে)। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩৮টি জায়গায় লার্ভা পাওয়া গেছে। তবে এই পরিসংখ্যান দিয়ে কোনভাবেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নির্ণয় করা যাবে না। কারণ একটি জায়গায় যে পরিমাণ লার্ভা হতে পারে বা হওয়ার শঙ্কা থাকে সেটাই কিন্তু পুরো এলাকায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট। সুতরাং আমরা চাইব, সবাই যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। আমাদের যে সকল বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যে সকল বিদ্যালয় রয়েছে, স্থাপনা রয়েছে তাদের স্ব স্ব কর্তৃপক্ষ একটু দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে, সকলে মিলে এই ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রতিরোধ করতে পারব।’

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস শুধু বাড়িই নয় বাড়ির চারপাশে কোথাও পানি জমে লার্ভা সৃষ্টি হয় এমন কিছু না রাখতে এবং প্রতিদিনকার জমা পানি প্রতিদিন ফেলে দিতে ঢাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান। 

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান বাবুল ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিরিন গাফফার উপস্থিত ছিলেন।
কেআই//