ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রাত পোহালেই বেনাপোল পৌরসভায় ভোট

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৫৮ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৩ রবিবার

সীমানা জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটগ্রহণ। অধীর উৎসাহ-উদ্দিপনায় অপেক্ষায় ভোটাররা।

সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলছে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। 

যথাসময়ে নির্বাচন না হওয়ায় এই নির্বাচনটি এখন সবার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি কেন্দ্রে সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমান টীম, ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নির্বাচন কমিশনারের পর্যবেক্ষক টিম থাকবে ভোট কেন্দ্রে। 

২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি বেনাপোল পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী নাজিম উদ্দিনকে হারিয়ে। অবশ্য এবার বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনে না এলেও জমে উঠেছে নির্বাচন। 

প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। পোস্টার ও মাইকের শহরে পরিণত হয়েছে বেনাপোল পৌরসভা। 

শেষ আষাঢ়ের ভ্যাপসা গরম ও মাঝে মধ্যে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা কাঁকডাকা ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত অবধি দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। নিজেদের যোগ্য হিসেবে তুলে ধরে লিফলেট দিয়ে ভোট চেয়েছেন। 

নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও শেষ মুহূর্তে এসে শনিবার (১৫ জুলাই) স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক হোসেন উজ্জল তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগ অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীর সমর্থনে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। 

এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন দুই জন মেয়র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আইনি জটিলতায় দীর্ঘদিন বেনাপোল পৌরবাসী ভোটাধিকার বঞ্চিত ছিল। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করেছি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে প্রার্থী করেছেন। দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে মাঠে নেমেছি। আশা করছি, পৌরবাসী স্বতঃর্স্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন। নির্বাচিত হলে পৌরসভা একটি সেবা কেন্দ্রে পরিণত করা হবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়িয়েছি। প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। আশা করছি, মেয়র হিসেবে আমি নির্বাচিত হবো। বেনাপোল পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে পারলে বেনাপোলবাসীর জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব। বেনাপোলবাসীর সেবা করার সুযোগ পেলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নের কাজ করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে। একটি সন্ত্রাসমুক্ত পৌরসভা উপহার দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে দুই জন প্রার্থী, সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত ৩টি মহিলা আসনে ১৫ জনসহ মোট ৬৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

১১টি গ্রাম/মহল্লা নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩০ হাজার ৩৮৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো: আনিছুর রহমান বলেন, বেনাপোল পৌরসভার তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা বাস্তবায়নের শার্শা উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। বেনাপোল পৌরসভায় আগামী ১৭ জুলাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনারের পর্যবেক্ষক দল থাকবে ভোট কেন্দ্রে। ইতোমধ্যে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে ভোট কেন্দ্রে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন ফাঁকফোকর রাখা হবে না বলে জানান তিনি।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল-মত নয়, যারা সৎ ও নির্ভীক এবং যার মাধ্যমে পৌর এলাকার উন্নয়ন হবে, সে ধরনের প্রার্থীকে তারা ভোট দেবেন। 

এএইচ