মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর বেহাল দশা (ভিডিও)
প্রতিনিধিদের খবর
প্রকাশিত : ১১:১৫ এএম, ২২ জুলাই ২০২৩ শনিবার
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেশকিছু যন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় সবাইকে ওষুধও দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় সমস্য সমাধানে যে যার মতো ভাবছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো।
অকেজো যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতা, অপর্যাপ্ত ওষুধ- এসব সংকট সাথে নিয়ে চলছে বিভাগীয় মেডিকেল হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম।
রাজশাহী মেডিকেলে এমনিতেই ডাক্তার-নার্সের সংকট আছে। প্যাথলজি বিভাগেও নেই প্রয়োজনীয় জনবল। মানসম্মত সেবা দিতে ১২০০ বেড থেকে ৩০০০ বেডে উন্নীত করার একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, “অ্যাপ্রভাল পেলে আমরা আরও ভালোভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবো।”
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অকেজো হয়ে পড়ে আছে সিটি স্ক্যান, এমআরআই মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। ফলে বেশিরভাগ পরীক্ষা বাইরে থেকেই করতে হয়। সরবরাহ না থাকায় কিডনী রোগীদের ডায়ালিসিসের উপকরণও বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতা আছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও। অপারেশনের জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে জটিল রোগীদেরও।
এক রোগী বলেন, “আমি সাড়ে চার মাস আগে এসেছি কিন্তু এখনও সিরিয়াল পাইনি। তাই এখনও আমার অপারেশন হয়নি।”
৫০০ শয্যার জন্য বরাদ্দ ওষুধ দিতে হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার রোগীকে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. রবিউল হাসান বলেন, “অপারেশনের পূর্বে যারা অজ্ঞান করবেন সেই ডাক্তারদের সংখ্যা কম হওয়ায় রোগীর সিডিউল দেওয়া যাচ্ছেনা।”
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অকেজো এমআরআই-সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি। মেশিন থাকলেও নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ, অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে রক্ত পরীক্ষার দামি মেশিনও।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে ২টি অপারেশন টেবিলের মধ্যে একটি নষ্ট দীর্ঘদিন ধরে। ৬টি লেবার টেবিলের মধ্যে সচল ২টি। পর্যাপ্ত বেডের অভাব রয়েছে বার্ন ইউনিটে। পোড়া রোগীদের জন্য নেই আইসিইউ ইউনিট।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, “আইসিইউসহ অবকাঠামোগুলো যদি পেয়ে যাই তাহলে অবশ্যই এখানে চিকিৎসা সেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করি।”
তবে বিপরীত চিত্র ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখানে রোগীরা বিনামূল্যে শতভাগ ওষুধ পাচ্ছেন। নামমাত্র মূল্যে হাসপাতালের ভেতরেই মিলছে আধুনিক সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
সংকট আছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও। সংকট দূর করার পাশপাশি ক্যান্সার, কার্ডিয়াক ও কিডনী সেন্টার এবং বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুইয়া বলেন, “কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে, এখানে ১০৮টি বেড হবে। আইসিইউ ও ওটিও থাকবে।”
নানা সংকটের মধ্যেও রোগীদের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন অন্যান্য হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষও
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রি. জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, “আমাদের এই চাপটা সহ্য করতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরেও সবাইকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।”
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা, সাইফুল ইসলাম বলেন, “আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে লোকজন পেয়েছি, তাদেরকে দক্ষ জনবল করার ক্ষেত্রে স্ব স্ব বিভাগে নিয়োজিত করা হয়েছে।”
বিভাগীয় হাসাপাতালগুলোতে আধুনিক ও মানসম্মত সেবা চান ভুক্তভোগীরা।
এএইচ