নির্মাণ হচ্ছে পদ্মা সেতু জাদুঘর (ভিডিও)
মুহাম্মদ নূরন নবী
প্রকাশিত : ১০:৫৪ এএম, ২৫ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১৬ এএম, ২৫ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার
শিঘ্রই শুরু হচ্ছে পদ্মা সেতু জাদুঘর ভবন নির্মাণ কাজ। এরইমধ্যে ভবনটির নকশা চূড়ান্ত করেছে সেতু বিভাগ। প্রাণি জাদুঘর ও সেতু তৈরির উল্লেখযোগ্য উপকরণ আর ইতিহাসের সব কিছু স্থান পাবে এই জাদুঘরে।
পাখি, মাছ, চিংড়ি, শামুক-ঝিনুক, কাঁকড়া, সাপ, বেজি, প্রজাপতি, পোকামাকড়। শুধু একটি অবকাঠামো নির্মাণ নয় এর নির্মাণের সাথে সাথে এই পদ্মা অববাহিকার আশপাশের এলাকাগুলোতে যে প্রাণী বৈচিত্র রয়েছে সেগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। যার ফলশ্রুতিতে এই প্রাণী জাদুঘরটি তৈরি হয়েছে।
নতুন প্রজন্মের কাছে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের ইতিহাস তুলে ধরতেই সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
জলজ ও স্থলজ স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভয়চর প্রাণীসহ কীটপতঙ্গের সংগ্রহশালাটিতে ১ হাজার ৫শ’ ৯৭টি প্রজাতির, ২ হাজার ৩শ’ ৬৯টি প্রাণি ও জীব বৈচিত্র্যের নমুনা ঠাঁই পেয়েছে।
ঘড়িয়াল, মিঠাপানির ডলফিন, গন্ধগোকুলসহ বিপন্ন প্রজাতির প্রাণিও আছে। যার, অর্ধেকের বেশি পদ্মা অববাহিকার। বাদবাকি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা।
কথা হচ্ছিল প্রাণি জাদুঘরের কিউরেটরের সাথে। জানালেন, প্রকৃতিতে যেভাবে এসব প্রাণি থাকতো, সেই আদল দেয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রাণি জাদুঘর কিউরেটর সুমন মণ্ডল বলেন, “পদ্মা সেতু এবং পদ্মা নদীর আশপাশের যে জেলাগুলো আছে মূলত এখান থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিশেষ করে বন্য প্রাণি মারা গেছে সেগুলো সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়েছে। পদ্মা নদী ও এর আশপাশে যেসব নৌকা চলতো সেই নৌকাগুলোর কিছু মডেল রাখা হয়েছে।”
মজার বিষয়, একটি প্রাণিও জীবন্ত অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়নি। মৃত প্রাণি এনে ভেতরে শক্ত অবয়ব দিয়ে, উপরের অংশ রাসায়নিক দিয়ে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বড় অবকাঠামো নির্মাণ হলে তার প্রভাব পড়ে জীব বৈচিত্র্যে। এসব বিবেচনায় রেখেই পদ্মা সেতু এলাকায় ইলিশ-কচ্ছপের প্রজনন, অন্যান্য পাখির অবাধ বিচরণসহ বন্য প্রাণির অবাধ বিচরণক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। জাদুঘরের এই সংরক্ষণ ভবিষ্যতে মূল্যায়ন ও তুলনায় হবে সহায়ক হবে মত বিশেষজ্ঞদের।
পদ্মা সেতুর পরিবেশগত সমীক্ষার বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, ““বাংলাদেশে প্রথম একটা প্রকল্পের আওতায় অভয়ারন্য করা হয়েছে। এই এরিয়ার ভেতরে অসময়ে মাছ ধরা ও এগ্রিকালচার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
প্রাণি জাদুঘর আর পদ্মা সেতু নির্মাণে যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও সেতু তৈরির ইতিহাস, বিবর্তনের গল্প এক ছাদের নিচে নেয়া হবে।
সেতু বিভাগ সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, “এই কনস্ট্রাকশনে যে অপকরণগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর কিছু কিছু জিনিস ভবিষ্য প্রজন্মের জন্যে আমরা ওখানে রাখতে চাই।”
শিঘ্রই ঠিকাদার নিয়োগ করে নির্মাণের কাজ এগিয়ে নেবার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান সেতু সচিব।
সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, “জাদুঘরের ডিজাইন ফাইনাল করে ফেলেছি এবং স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।”
এএইচ