প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দীর্ঘ দিনের কাঠামোগত সমস্যা সমাধানের পরামর্শ আইএমএফের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১০ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও সহনশীল করতে এবং উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে দীর্ঘ দিনের কাঠামোগত সমস্যার সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
আইএমএফ-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগ (এপিডি)-র পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন সম্প্রতি বাসস’র সঙ্গে সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘নীতির অগ্রাধিকারগুলোকে অবশ্যই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক সমস্যার প্রভাব কমিয়ে আনা এবং বিনিময় হারের ক্রমাগত নমনীয়তার মাধ্যমে বাহ্যিক সহনশীলতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ দিনের কাঠামোগত সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘কিছু মূল অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে, কর রাজস্ব বাড়ানোর দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা, যা টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সামাজিক, উন্নয়নমূলক এবং জলবায়ুর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ব্যয় বৃদ্ধির চাবিকাঠি।’
শ্রীনিবাসন দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের সহায়তার জন্য কর ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতিতে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বাংলাদেশের শক্তিশালী পুনরুদ্ধারকে বাধাগ্রস্ত এবং নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব একাধিক আঘাত বা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। প্রথমত, আমরা কোভিড-১৯ মহামারীর মুখোমুখি হয়েছি। এখন আমরা ইউক্রেন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছি। ইউক্রেনের যুদ্ধ জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কারণ, এটি সমস্ত পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব একাধিক আঘাত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে লেনদেনের ভারসাম্য, মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক অবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলেছে এবং এসব কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ধীর গতি হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আর্থিক খাতের দুর্বলতা হ্রাস করা, তদারকি জোরদার করা, শাসন ব্যবস্থা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো উন্নত করা এবং পুঁজিবাজারের উন্নয়ন গতিশীল করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জনে অর্থায়নকে একত্রিত করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক পরিবেশ বৃদ্ধির জন্য শাসন ব্যবস্থার উন্নতি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে। এই সংস্কারগুলো-ব্যক্তিগত বিনিয়োগ বাড়ানো ও রপ্তানি বহুমুখীকরণ প্রচেষ্টার সাথে মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও সহনশীলতার সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করবে। এটি দীর্ঘমেয়াদী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং সেইসাথে ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা সহায়তা করবে।
তিনি অবশ্য বলেন, নিকটবর্তী চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অনুকূল জনসংখ্যা একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ দেখায়।
এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি পরামর্শ দেন, দেশটিকে অবশ্যই তার অর্থনীতিকে আরও স্থিতিস্থাপক করতে সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং উচ্চ মধ্যম আয়ের পর্যায়ে পৌঁছাতে দেশটির যে আকাক্সক্ষা তার অগ্রগতি পুনরায় শুরু করতে হবে।
কেআই//