ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

নিলামে উঠছে এমারেল্ড অয়েলের সম্পত্তি (ভিডিও)

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : ১২:০১ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পত্তি নিলামে তুলছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অর্থঋণ আদালতের মামলার রায় অনুযায়ী আগামী ১৬ আগস্ট কোম্পানিটির বন্ধকী সম্পত্তির নিলাম হবে। তবে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে শেয়ারের দর ৪৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিটির নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে নানা কানাঘুষা। 

২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় ২০১৬ সালে। বিপুল পরিমাণে ব্যাংক ঋণ ও পুঞ্জিভুত লোকসানে ডুবে থাকা কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা দেশ ছাড়েন। এমন পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের মার্চে ৫ জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও মিনরি বাংলাদেশ লিমিটেড মনোনীত তিনজনকে পরিচালক নিয়োগ দিয়ে কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বিএসইসি।

৯ জানুয়ারি ২০২২ সালে পুনরায় উৎপাদনে আসে এমারেল্ড অয়েল। ২০২২ সালের জন্য গত ৪ জুন ২ শতাংশ এবং ৮ জুন ৫ শতাংশ অন্তবর্তীকালিন লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এসব ভেলকিতে মাত্র ৩২ টাকা দামের শেয়ার তিন মাসের মধ্যে বেড়ে গত ১২ জুলাই ১৮৮ টাকায় উন্নীত হয়।

বাজার বিশেষজ্ঞারা বলছেন, কোম্পানিটির উৎপাদনে ফেরা, মুনাফা ঘোষণা এবং অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, সবকিছুর পেছনেই একটি কারসাজি চক্র কাজ করছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন বলেন, “তারা কতটুকু উৎপাদন করেছে, প্রডাকশনের পর যা টার্নওভার হয়েছে তার পুরোটাই লভ্যাংশ নয়। এখানে কস্টিং থাকে, এখানে লভাংশের হার খুবই কম। সেই লভ্যাংশ দিয়ে তো যে ঋণ আছে তা শোধ করা যাবেনা। এই কোম্পানির শেয়ার ৩৭ টাকা ছিল, নামমাত্র ডিভিডেন্ট দেয়ার পর ১৮৮ টাকা। এর পুরোটাই কারসাজি চক্র করছে এটা পরিষ্কার।”

এদিকে, বেসিক ব্যাংকের কাছে কোম্পানিটির দেনা কমপক্ষে ১৪০ কোটি টাকা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অর্থঋণ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এমারেল্ড অয়েলের বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে তোলা হচ্ছে। 

তবে সম্পত্তি নিলাম হলে বিনিয়োগকারীদের কী হবে, তার উত্তর নেই পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে। 

বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ব্যাংক যদি বলে এরা ডিউজগুলো সঠিকভাবে দিচ্ছে সেক্ষেত্রে বোঝা যাবে ব্যাংকের সাথে তাদের লেনদেন ঠিক আছে। এখন যদি না থেকে থাকে তখন আমরা অ্যাকশনে যাব।”

নিলাম নিয়েও চলছে নানা কানাঘুষা। পুরো প্রক্রিয়ায় একটি দুষ্টুচক্র এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু কর্মকর্তার ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার যোগসাজসের সন্দেহ করছেন কেউ কেউ। যদিও কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ও লেনদেনে কারসাজি হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে বিএসইসি।

শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছি, এমন কোনো পিএসই আছে কিনা যেটার কারণে মূল্য বৃদ্ধি বেড়েছে। তারা জানিয়েছে যে, তেমন কোনো পিএসএ নেই। যদি পিএসএ না থাকে তাহলে যদি এটা বাড়ে তখন আমাদেরকে অনুসন্ধান করতে হয়। সেটি আমরা ইতোমধ্যে শুরু করেছি যে, কেন একটি শেয়ারের মূল্য এভাবে বেড়ে গেছে।”

এরই মধ্যে একটি জাতীয় দৈনিকে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তোলার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে বেসিক ব্যাংক। 

এএইচ