ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

খোকসায় অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষীদের দুর্ভোগ

রঞ্জন ভৌমিক, খোকসা কুষ্টিয়া

প্রকাশিত : ১২:২২ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ১২:৫১ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার

পাটকে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ বলা হয় । পাট বিক্রি করে প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও ভরা বর্ষায় কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার পাট চাষীরা বিপাকে পড়েছে।

এবছর লক্ষ্যমাত্রা থেকেও বেশি পরিমাণ চাষীরা পাট আবাদ করেছে। কিন্তু পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। জেলার ৫০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ করায় এবছর উপজেলায় ৪ হাজার ৫'শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকেও অনেক বেশি। 

কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় স্থানীয় ৮ হাজার কৃষক জমি থেকে পাট কেটে জাগ েদেওয়ার জায়গা না পাওয়ায় জমিতে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরে আষাঢ় শ্রাবণ মাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় জমি থেকে পাট কেটে কৃষকরা জমিতে আবার ধান আবাদ করে। এ বছর শ্রাবনের মাঝামাঝিতে বৃষ্টি না পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষ করে বিপাকে পড়েছে। অধিকাংশ খাল, বিল, নদীনালা ও ডোবা  জায়গাগুলোতে পানি না থাকায় পাট চাষীদের পাট যেন এখন গলায় ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাই কোথাও জাগ (পচান) দেওয়ার জায়গা। 

স্থানীয় কৃষি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা পাট নিয়ে বেশ সমস্যায় ভুগছে। এমনকি আগাম ধান উৎপাদনে ও তারা পিছিয়ে পড়ছে। 

এদিকে কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, জুন মাসে কুমারখালীতে ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও জুলাই মাসে ১৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত বছরের থেকে অনেক কম।  

সাধারণত আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বর্ষা মৌসুম হাওয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় স্থানীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। 

পাট চাষী রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে পাটের সার পেয়ে প্রায় ছয় বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি, কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় জমি থেকে পাট কাটতে পারছি না, এমনকি পাট কাটলেও জাগ দেওয়ার আর কোন জায়গা না থাকায় রাস্তার ধারে বা জমির কোলে ফেলে রাখা হচ্ছে ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, পাট চাষীদের জন্য পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার নির্ধারিত সময় আষাঢ়-শ্রাবণ মাস। এ সময়ের মধ্যে বৃষ্টি না হলে কৃষকদের অনেকটাই শঙ্কায় পড়তে হয়। 

খোকসার পাট ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান পাটের যে মূল্য এতে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুই হাজার থেকে পাঁচিশ শ টাকা মূল্যে বর্তমানে পাট বিক্রি হচ্ছে । তিনহাজার টাকা মূল্য বাজারদর হলে কৃষকরা লাভবান হবে বলে তিনি জানান ।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে কৃষকদের মাঝে ঘুরে দেখা গেছে কাঙ্খিত বৃষ্টি ও পানি না থাকায় কৃষকের জমিতে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। 

এমএম//