ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

পরীক্ষামূলক উৎপাদনে গেল মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার

পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কয়লাভিত্তিক মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। এই ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। 

আজ শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে এই ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন মজুমদার।

তিনি জানান, পরীক্ষামূলক উৎপাদনের শুরুতে ৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। বিকাল থেকে এর উৎপাদন আরও বাড়বে।  এই ইউনিটে ১২৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎই পরীক্ষামুলকভাবে উৎপাদন করা হবে। উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এই ইউনিটে পুরো সক্ষমতা অনুযায়ী ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার আশা করছেন কর্মকর্তারা। 

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের মাঝামাঝি এক হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে দুটি ইউনিটে বিভক্ত ১২শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। 

মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষণমূলক উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ডিসেম্বর মাসে। সেটিতেও পরীক্ষণমূলক উৎপাদনে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ডিসেম্বরে ইউনিটটি নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে বাণিজ্যিক উৎপাদনের যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি জাপানের আর্থিক সহায়তার প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো প্ল্যান্টে প্রতিদিন ১০ হাজার টন ও প্রতিটি ইউনিটে পাঁচ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত তিন লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং আরও ৬৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আগামী ৭ আগস্ট উৎপাদন এলাকায় পৌঁছাবে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাঙ্কে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দুটি জেটির পাশাপাশি ১.৭ মিলিয়ন টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাঙ্ক ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। ট্যাঙ্কগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দু’দিন সময় লাগে। কয়লা উত্তোলনের জন্য দুটি জেটি এবং কয়লা সংরক্ষণের জন্য চারটি ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। 

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাইটের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

এএইচ