ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড মুজিবুর বিপুল সম্পদের মালিক

সাইদুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১১:১৮ এএম, ৩০ জুলাই ২০২৩ রবিবার

কখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, কখনো রাজউকের অথরাইজড অফিসার আবার কখনো গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী- নিজেকে এভাবে উপস্থাপন করে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। বলছিলাম- খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চাকরিচ্যুত চেইনম্যান মুজিবুর রহমানের কথা। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড মুজিবুর এখন বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক। 

চেইনম্যান মুজিবুর রহমান। ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে। এরপর শুরু তার বহুমুখী পরিচয়ের বহুবিধ প্রতারণা। রাজউকের প্লট দেয়ার নামে একাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। 

পূর্বাচলে জায়গা বিক্রির কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ কোটি ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মুজিবুর। শুধু তাই নয়, টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে স্ট্যাম্প ও সই জালিয়াতি করে উল্টো ৬ কোটি টাকার মামলা ঠুকে দেয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন পিবিআইয়ের তদন্তে তার মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এরপর আরও একটি মামলা করেন ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে, সেটিও মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, “প্রতিটি মামলায় আমরা মুজিবুরের পক্ষে থাকতে পারিনি। কারণ, সমস্ত সাক্ষ্য আসামির পক্ষে চলে যায়। একটা ক্ষেত্রে আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, মুজিবুর যেসব তথ্য দিয়ে মামলা করেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা “

পিবিআই প্রধান জানান, মিথ্যা মামলার জন্য মুজিবুরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, “যদি মোস্তাফিজুর রহমান চান তাহলে তাকে আদালতে যেতে হবে। অথবা আদালত নিজে বা পিবিআই অথবা অন্য কোনো সংস্থা নিতে পারবে।”

পিবিআইয়ের তদন্তে জালিয়াতি ধরার পর ভুক্তভোগীকে সব টাকা পরিশোধে কয়েকটি চেক প্রদান করেন মুজিবুর। কিন্তু চেকগুলো ব্যাংকে ডিজঅনার হয়। 

শুধু এই ব্যক্তির সাথেই নয় অনেকেরই সাথেই মুজিবুর এমন প্রতারণা করেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন ফ্ল্যাট ওনার এসোসিয়েশন।

ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “একুশে টেলিভিশনে নিউজ হওয়ার পর এই ব্লিডিংয়ের অন্তত ৪০ আসেন তার কাছে টাকা পাবেন বলে।”

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিটিভির সাবেক পরিচালক শেখ আব্দুল সালেক বলেন, “নতুন করে তার প্রতারণার বিভিন্ন প্রজেক্ট আমরা জানতে পেরেছি।”

ধানমন্ডি ফ্ল্যাট ওনার্স এসোসিয়েশনের আবু সুফিয়ান বলেন, “আমরা আগে এই বিষয়টির সুষ্টু সমাধান চাই। তারপর কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেই পদক্ষেপে আমরা যাব।”

একের পর এক প্রতারণা করার পরও কেন আইনের আওতায় আসছেনা মুজিবুর, এমন প্রশ্ন অনেকের।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল সালেক বলেন, “এক হলো এডমিনেশন চোখ বুঝে থাকা, অপরাধগুলো দেখে আমি দেখলাম না। এর চেয়ে বড় অন্যায় সব জেনেশুনে তারা অ্যাকশনে না যাওয়া।”

প্রতারণার এমন সব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য মুজিবুর রহমানের বাসায় গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তাকে পাওয়া গেল গৃহায়ণ  কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে। আগে চাকরি করতাম এজন্য এখানে এসেছিলাম।

এএইচ