আমাদের শান্তিপ্রিয় মনোভাবকে দুর্বলতা ভাববেন না: শেখ পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৭ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৩ রবিবার
বিএনপি-জামাতের হত্যা, ষড়যন্ত্র, অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আজ ৩০ জুলাই, রবিবার, বিকাল ৪টায়, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল। সভাপতিত্ব করেন-ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, সঞ্চালনা করেন-ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-আমার দাদী শেখ মুজিবুর রহমানের মেজো বোন তিনি একটা কথা বলতেন যে, কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। বিএনপি যতই সাধু সাজার চেষ্টা করুক তাদের আসল চেহারা কিন্তু বের হয়ে আসতেছে। ভিসা নীতির হওয়ার পরেই তারা গত মাসে চট্টগ্রামে সমাবেশ শেষে ফেরার পথে রাতের অন্ধকারে বাস পুড়িয়েছে, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি নিয়ে তৈরি ম্যুরালে ভাংচুর চালিয়েছে এবং যান-মালের ক্ষতি সাধন করেছে। গত জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত আমাদের চার পাঁচ জন নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এর নিন্দা করার ভাষা আমাদের নাই। আমরা তাদেরকে শুধু সতর্ক করে বলতে চাই-আপনারা এদেশের শান্তি প্রিয় নাগরিকদের জান-মালের ক্ষতি করবেন, তাদের গায়ে হাত তুলবেন আর যুবলীগ বসে বসে আঙ্গুল চুষবে, এটা আপনারা কল্পনা করতেও পারবেন না। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ সৃষ্টি করেছে মুজিব বাহিনীর প্রধান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সবাই মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান। মুক্তিকামী বাঙালির সন্তান। এদেরকে আপনারা এইভাবে দমন পীড়ন করবেন আর আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ঠান্ডা হয়ে বসে থাকবে না। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আপনাদের আহ্বান জানাবো, আপনারা সজাগ এবং সচেতন থাকবেন একই সাথে সতর্ক থাকবেন। এই খুনির দল যারা ১৯৭১ সারে শান্তি প্রিয় স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। যারা ১৪ই ডিসেম্বর আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট যারা ঘটিয়েছিল সেই খুনিদের নিয়ে যারা রাজনৈতিক দল গড়ে, জোট করে তাদের যারা পৃষ্ঠপোষক করে তাদের নিয়ে এই বিএনপি-জামাত। এ কারণেই তারা খুনিদের দল।
তাদের শীর্ষ নেত্রী এদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়েও কটুক্তি করতে ছাড়ে নাই। তারা ২০০১ সালেও ঐ খুনিদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় এসেছে। তারা এই বাংলাদেশ বিরোধী, তারা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা এদেশের স্বাধীনতা লুণ্ঠন করতে চাই। আজকে যখন বাংলাদেশ একটা প্রগতিশীল উন্নয়নশীল বাংলাদেশ গড়ার পথে। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যখন উন্নয়নের মহাসড়কে তখন তারা বিদেশীদের সাথে ষড়যন্ত্র করে হত্যা এবং খুনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চাচ্ছে। আমাদের নেত্রী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে মনে করেন। একারণেই তিনি এদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন করে চলেছেন। আজকে শেখ হাসিনার উন্নয়ন সারা বিশ্বের রোল মডেল। আল জাজিরার প্রতিবেদনেও আজকে স্বীকার করা হয় যে, বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার যে অর্জন সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারে না। আমাদের যুবলীগ এদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
যত দিন আপনারা এইভাবে আত্মত্যাগী ভূমিকা রাখবেন এবং গত ২ মাস যাবৎ যে ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয় দাবিদার। যুবলীগ সবচেয়ে আন্তরিক ও একনিষ্ঠভাবে সংগঠন করে। যুবলীগের নেতা-কর্মীরা যতদিন সজাগ সতর্ক ও সচেতন থাকবে কোন অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না। আজকে তারা হত্যা এবং খুনের পথ বেছে নিয়েছে। এটা তাদের সেই পুরাতন চেহারা। তারা নিজেরাই এখন ভিসানীতির আওতায় পড়ে গেছে। এখন বিএনপি চাচ্ছে যে, নিজে যখন মরবো, সবাইকে সাথে করেই মরবো। কিন্তু আমরা সেই পথ বেচে নিবো না, আমরা শান্তি প্রিয় আছি, আমাদের শান্তি প্রিয় মনোভাবকে দুর্বলতা ভাববেন না। এটা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি’র হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠনের প্রত্যেকটা এক একটা যোদ্ধা। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দুর্বল ভাববেন না। আর একবার হাত তুলে দেখেন, সেই হাত আমরা ভেঙ্গে দেবো। যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এদেশের অগ্রযাত্রায় জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে যে কোন আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-দেশবিরোধীগোষ্ঠী বিএনপি-জামাত গতকাল সারা বাংলাদেশ থেকে ঢাকা শহরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ঢাকার প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করার কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। আমরা বরাবরই বলছি বিএনপি একটি জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সংগঠনের কাজই হলো দেশকে ধ্বংস করা, দেশের অর্থনীতিকে দাবিয়ে দেওয়া। সেই কাজটিই তারা করছেন। সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে আমি দেশবাসীকে জানাতে চাই বিএনপি-জামাতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। যদি দেশকে এবং দেশের মানুষেকে ভালোবাসেন তাহলে এখনই এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আপনারা লক্ষ্য করেছেন গতকাল তারা নিরীহ মানুষের উপর আঘাত করেছে, রামদা নিয়ে হামলা করেছে। আমরা বিএনপি-জামাতের বিদেশী প্রভুদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা এই দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি বিএনপি-জামাতের সৃষ্ট ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ও তা-বনীলা দেখুন। তারা কর্মসূচির নামে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা করেছে। তারা পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, বাস পুড়িয়ে দিয়েছে, এসব কিসের আলামত? বিএনপি-জামাতের এসব কর্মকা-ের অর্থ হলো বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক সেটা তারা চায় না।
আপনারা বলেছেন-বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা বলেছি-বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আপনারা বলেছেন-এই নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদেরকে আপনারা মার্কিন ভিসা দিবেন না, আমরা স্বাগত জানিয়েছি। বিএনপি-জামাত গত কিছুদিন যাবৎ বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশকে যেভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। সেই সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে আপনাদের সিদ্ধান্ত বাংলার মানুষ দেখতে চায়। বাংলাদেশের শান্তি প্রিয় মানুষের প্রতি আপনাদের সমর্থন থাকবে না জঙ্গিবাদের দিকে আপনাদের সমর্থন থাকবে সেটিও বাংলার মানুষ দেখতে চায়। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমরা যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। আমরা শেখ হাসিনার সৈনিক। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে, বাংলাদেশে মানুষ শান্তিতে আছে। বিএনপি জামাত ষড়যন্ত্র করে এদেশের শান্তি নষ্ট করতে চায়। আমরা রক্ত দিয়ে হলেও তাদের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, মোঃ এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কেআই//