ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৬ ১৪৩১

কাফনের কাপড় গায়ে আমরণ অনশনে জাবির অস্থায়ী কর্মচারীরা

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৩ সোমবার

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গত ১৭ জুলাই থেকে টানা ১৪ দিন অবস্থান ধর্মঘট পালনের পর আমরণ অনশনে বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় রোববার সকাল থেকে নতুন প্রশাসনিক ভনের সামনে অনশনে বসেন তারা। 

আজ সোমবার দুজন কর্মচারী কাফনের কাপড় পরে অনশন শুরু করেন।

কর্মচারীদের দাবি, চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত  তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে কয়েকবার মানববন্ধন করেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি আমরণ অনশনে বসলে প্রশাসন ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে তাদের নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেন। 

তবে আশ্বাসের ছয় মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসন নিয়োগের ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখায়নি। বিভিন্ন পদে অন্যদের নিয়োগ দিলেও অস্থায়ী এসব কর্মচারীদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল ও অন্যান্য অফিসে বর্তমানে ১৪২ জন কর্মচারী দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন। পূর্বে প্রতিদিনের কাজের বিনিময়ে এসকল কর্মচারীরা ৩৩০ টাকা বেতন পেতেন। পরবর্তীতে গত বছরের শেষ দিকে কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৭০ টাকা বাড়িয়ে প্রশাসন ৪০০ টাকা বেতন নির্ধারণ করেন। এছাড়াও ঈদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে স্থায়ী কর্মচারীরা পূর্ণ বোনাস পেলেও অস্থায়ী কর্মচারীরা দৈনিক বেতনের বাইরে কোন বোনাস বা ইনক্রিমেন্ট পান না।

শেখ হাসিনা হলের মালি শরিফুল ইসলাম এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের অস্থায়ী কর্মচারী মো. রায়হান আজ কাফনের কাপড় পরে অনশনে বসেছেন। তারা বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই, হয় আমাদের চাকরি দিতে হবে, নাহলে মৃত্যু। তাই কাফনের কাপড় পরে অবস্থান নিয়েছি। যদি মারা যাই, আমাদের লাশ এই রেজিস্ট্রার অফিসের সামনেই যেন মাটি দেওয়া হয়।’

জাহানারা ইমাম হলের অফিস সহায়ক নাসরিন আক্তার বলেন, ‘১৩ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরও চাকরি স্থায়ীকরণে প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। এরমধ্যে গত ১৮ জুলাই উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও সাবক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির স্যার আমাদের সাথে কথা বলতে আসেন। সেসময় শরীফ স্যার ২৭ জুলাই ইউজিসির সাথে মিটিং করে আমাদের একটা ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। কিন্তু মিটিং থেকে ফিরে রেজিস্ট্রার জানান, ইউজিসি নতুন কোন পদ দেয়নি। আমরা যেন আমাদের স্ব স্ব কর্মস্থলে ফিরে যাই। কিন্তু কোনো আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। অফিসে গেলে তাদের একান্ত সচিব জানান, তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। 

এএইচ