বই আবিষ্কারের কাহিনি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৫২ এএম, ২ আগস্ট ২০২৩ বুধবার
আজ থেকে দুই হাজার ২০০ বছর আগে চীনদেশে কাগজ আবিষ্কৃত হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্বাব্দ ১২৯ সাল। কাগজ আবিষ্কারের ঠিক ৭১ বছর পরের কথা।
উ চুং পুং নামে এক চীনা যুবক তার প্রতিবেশী ছু ছুং নামে এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। তাদের এ প্রেমের কথা কেউ জানে না। জানবে কীভাবে, তারা কখনোই একে অন্যের সঙ্গে দেখা করেন না। তাদের মধ্যে যোগাযোগ ঘটে একমাত্র চিঠির মাধ্যমে। কাগজে চিঠি লিখে তারা কবুতরের পায়ে বেঁধে অন্যের উদ্দেশে উড়িয়ে দেন। এভাবে একে অন্যের সঙ্গে মনের কথা আদান-প্রদান করতে করতে প্রত্যেকের কাছে বিপুল পরিমাণ চিঠি জমে গেল। এরই মধ্যে একদিন আকাশে কালো মেঘ হাজির হলো। ঝড় উঠলো। দমকা হাওয়াসহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলো। সেই ঝড়ে উ চুং পুংদের বাড়ির ছাদ গেল উড়ে। বৃষ্টির পানিতে তার সব চিঠি ভিজে চপচপ করতে লাগল। প্রেমপত্রগুলো ছিল উ চুং পুংয়ের পছন্দের জিনিস। সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করলেন কিন্তু পারলেন না। পরদিন ঝড় থেমে গেল। আকাশে
উদিত হলো রক্তিম সূর্য। উ চুং পুং সেই রোদে চিঠিগুলো শুকাতে দিলেন। ঠিক এ সময় ঘটল এক যুগান্তকারী ঘটনা। উ চুং পুংয়ের দেড় বছর বয়সী ভাগ্নে মু মু দেং এক ধরনের আঠা এনে সব আঠা তার চিঠির ওপর ঢেলে দিলেন। উ চুং পুং যখন ঘটনা টের পেলেন ততক্ষণে কাগজগুলো একটা আরেকটার সঙ্গে লেগে গেছে। উ চুং পুং তার জোড়া লেগে যাওয়া চিঠি পৃথক করার চেষ্টা করলেন; কিন্তু পারলেন না। হঠাৎ তিনি খেয়াল করে দেখলেন, আঠার কারণে কাগজগুলো একটা আরেকটার সঙ্গে এত চমৎকারভাবে লেগেছে যে, তা দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে। আসলে প্রেমপত্রগুলো একটা আরেকটার ওপর থাকায় আঠা লেগে তা অনেকটা বইয়ের মতো হয়ে গিয়েছিল। এরপর উ চুং পুং তার কাগজপত্র এভাবে আঠা দিয়ে আটকে সংরক্ষণ করতে শুরু করলেন। তার দেখাদেখি গ্রামের অন্যরাও তা করতে শুরু করল। বিদগ্ধজনরা সে ঘটনাকেই বই আবিষ্কারের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেন।