পান্না কায়সারের দাফন রোববার, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৮ পিএম, ৪ আগস্ট ২০২৩ শুক্রবার
সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক পান্না কায়সারের প্রথম জানাজা আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বেলা পৌনে ৩টার দিকে পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউস নগর আবাসিক এলাকার বাসায় নেয়া হয়। সেখানে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া সাহিত্যিক, শিল্পী, প্রকাশকসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আজ বাদ আসর নিউ ইস্কাটনের বাসার সামনে পান্না কায়সারের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী রোববার বেলা ১১টায় পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। বেলা একটা পর্যন্ত তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার তৃতীয় জানাজা হবে। পরে তাকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আজ সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী। পান্না কায়সার ১৯৫০ সালের ২৫ মে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শহীদুল্লাহ কায়সারের সাথে তার বিয়ে হয়। সেদিন ঢাকা শহরে কারফিউ ছিল। পুরো দেশ তখন গণআন্দোলনে উত্তাল। শহীদুল্লাহ কায়সারের হাত ধরে শুরু করে তার প্রায় সাড়ে চার দশকের পথচলা আধুনিক সাহিত্যের সঙ্গে, বাঙালি সংস্কৃতি আর প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা শহীদুল্লাহ কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফেরেন নি। এরপর পান্না কায়সার একা হাতে বড় করে তুলেন তার দু’সন্তান শমী কায়সার এবং অমিতাভ কায়সারকে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের অবদান অপরিসীম। সংসার জীবনে আবদ্ধ না থেকে পান্না কায়সার দায়িত্ব নিয়েছেন লাখো কোটি শিশু-কিশোরকে সোনার মানুষে পরিণত করার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯০-তে তিনি এই সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খেলাঘরের মাধ্যমে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’ এই স্লোগান সারাদেশের শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করতেও সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
ঔপন্যাসিক ও গবেষক পান্না কায়সার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এই শহীদ জায়া শিক্ষকতা করেছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে।
তিনি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গবেষণায় ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
সূত্র: বাসস
এসবি/