বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত সৈনিকরা বিচার থেকে বাদ কেন? (ভিডিও)
আতিক রহমান পূর্নিয়া
প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ৭ আগস্ট ২০২৩ সোমবার | আপডেট: ১১:৩৭ এএম, ৭ আগস্ট ২০২৩ সোমবার
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত সাধারণ সৈনিকদের বিচার না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গবেষক এবং বিচার প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্টরা। খুনি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার হলেও শিশু রাসেলসহ অন্যদের সরাসরি হত্যাকারী সৈনিকদের তালিকাও কোথাও না থাকায় আক্ষেপ তাদের।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মিশনে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রায় ছয়শ’ সৈনিকও। তাদের ১২৫ জন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে, ৭৫ জন আব্দুর রব সেরনিয়াবাদের বাড়িতে ও ৭৫ জন যান শেখ ফজলুল হক মণির বাড়িতে। জাহাঙ্গীর গেটে ৩৫ জন, তৎকালিন বিডিআর গেটে ৭৫ জন, টেলিভিশন ভবনে ৪৫ জন, রেডিও স্টেশনে ৩৫ জন, ফার্মগেটে ৩৫ জন এবং ১১০ জন রক্ষীবাহিনী ক্যাম্পের কাছাকাছি ছিলেন পাহারায়।
স্বউদ্যোগী হয়ে হত্যাযজ্ঞে অংশ নেন এদের অনেকেই।
গবেষক নুরুল আনোয়ার বলেন, “কোনো এক ফাঁকে রাসেল নীচে নেমে এসেছিল, বঙ্গবন্ধুর এক স্টাফকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল আমাকে মেরে ফেলবে না তো। তখন নুরুল উপর থেকে লোক পাঠায়, সে খুঁজে বের করে রাসেলকে বলে তোমাকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। উপরে মায়ের কাছে এনে রাসেলকেও গুলি করে মেরে ফেললো। এগুলো শুধু ওই ১৬ জনই অফিসারই করেছে। রেডিও স্টেশন-টিভি পাহাড়া দেওয়া, ইপিআর গেট পাহাড়া, ফার্মগেটে লোক রাখা- এগুলো কি ওই কয়টা লোকেই করেছে? বাকি লোক কারা ছিল? সৈনিক ছিল। সৈনিকের দুটি ইউনিট ছিল। টু-ফিল্ড কুমিল্লা থেকে এসেছিল কিছু লোক আর লাঞ্চারের লোক, তখন যেটা ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট।”
এই গবেষক বলেন, ওইসব সৈনিকদের পরিচয়টুকু অন্তত এখন জাতির জানা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “যদি প্রচার করা যায়, পোস্টারিং করে ইউএনও অফিস, লঞ্চ-স্টিমার ঘাট, ট্রেনে যদি ছবি দেওয়া হয় তবে লোকে চিনে ফেলবে। তখন এদের প্রতি নজর পড়বে, সাথে সাথে যথাস্থানে রিপোর্ট হয়ে যাবে।”
বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং বিচার নিয়ে ওয়াকিবহাল আরো অনেকেও ওইসব সৈনিকের পরিচয় এবং বিচার চেয়ে দীর্ঘদিন সোচ্চার।
মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, “শেখ ফজলুল হক মনির হত্যাকাণ্ড পৃথক জায়গায় হয়েছিল। পৃথক জায়গায় ঘটনা ঘটলে সেটি একটি পৃথক ঘটনা। সেই ঘটনার আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। কাজেই আমি মনে করি, কিছু প্রত্যক্ষ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সাজা হলেও ঘটনার ক্যানভাস তো অনেক বড় ছিল। তাদের বিচার হওয়া দরকার, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার মিশনে থাকা সৈনিকদের বিচার না হওয়ার বিষয়ে সদুত্তর নেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় যুক্তদের কাছেও।
আবুল কাহার আকন্দ বলেন, “এসমস্ত যদি আরও গভীরভাবে জানতে হয় তাহলে সরকার ইচ্ছা করলে একটা কমিশন গঠন করতে পারে এবং কমিশন গঠন করে নতুন কোনো লোক পাওয়া যায় সেটাও বিচারে যেতে পারে। আইনে আছে যে বিষয়টার বিচার হয়নি সেটা যদি পাওয়া যায় তার আবার বিচার হতে পারে।”
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতায় ওইসব সৈনিক এবং তাদের পরবর্তি প্রজন্ম অংশ নেয় বলেও মনে করেন গবেষকরা।
এএইচ