ঢাকা, সোমবার   ১৩ জানুয়ারি ২০২৫,   পৌষ ৩০ ১৪৩১

নাইজারে সেনা হস্তক্ষেপ নিয়ে বৈঠকে বসেছে প্রতিবেশীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৭ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:২৭ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৩ বৃহস্পতিবার

আফ্রিকার দেশ নাইজারের পরিস্থিতিতে কীভাবে হস্তক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে আলোচনার জন্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট ইকোওয়াস নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় এক জরুরি বৈঠকে বসেছে।

নাইজারে গত ২৬শে জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের পর ইকোওয়াস সেনা শাসনের অবসান দাবি করে এবং নাইজারের সামরিক জান্তাকে গত ৬ই জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়।

সেই সময়সীমা পার হওয়ার পর ইকোওয়াস জোট এখন বৈঠক করছে।

বিবিসির আফ্রিকা সংবাদদাতা অ্যান্ড্রু হার্ডিং জানাচ্ছেন, নাইজারের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সামরিক কিংবা কূটনৈতিক শক্তি ব্যবহারের প্রশ্নে পশ্চিম আফ্রিকার নেতাদের সামনে সহজ কোন বিকল্প খোলা নেই।

তারা নাইজারে গণতন্ত্র পুন-প্রতিষ্ঠা নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ আকারে বিশাল কিন্তু দরিদ্র এই দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে শঙ্কা
কিন্তু নাইজারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক নেতারা এখন পর্যন্ত বাইরের বিশ্বের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন।

ইকোওয়াস নিজেরের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারেরও হুমকি দিয়েছে।

বিবিসি সংবাদদাতা বলছেন, কয়েক বছর আগে, এধরনের হুমকি মোটামুটি সহজবোধ্য বিকল্প হতে পারতো।

কিন্তু নাইজারের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে যাতে সহায়তা করেছে রাশিয়ার ভাড়াটে সৈন্যদল ওয়াগনার গ্রুপ।

মালির সেনা শাসকরা বলছে, তারা নাইজারের জেনারেলদের পাশে আছেন।

সব মিলিয়ে আফ্রিকার একটি বিশাল অস্থিতিশীল অংশ এখন আরও বেশি ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ওদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দিচ্ছে, নাইজারে সেনা শাসনের পর প্রশ্ন উঠেছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ১,১০০ জন সৈন্যকে সে দেশে আর রাখতে পারবে কিনা।

সাহেল অঞ্চলে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই মার্কিনীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

নাইজারের সেনা অভ্যুত্থানের নায়করা এখন ওয়াগনার গ্রুপের কাছে সাহায্য চাইলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ওয়াগনার গ্রুপকে একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে।

ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন নাইজারের অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তার ভাড়াটে সৈন্যরা সে দেশের শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সেনা শাসকদের সাহায্য করতে তৈরি আছে।

নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা
ওদিকে নাইজারের সামরিক অভ্যুত্থানের নেতারা বৃহস্পতিবার ইকোওয়াস শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগে এক ঘোষণার মাধ্যমে একটি নতুন সরকার গঠন করছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ঘোষণায় সামরিক জান্তার প্রধান জেনারেল আবদুরাহমান ছিয়ানির পক্ষে মন্ত্রিসভার ২১ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়।

সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন লামিন জেইন আলি মহামানে। তিনি একই সাথে অর্থমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করবেন।

নাইজার সেনাবাহিনীর সাবেক স্টাফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালিফু মোদি, যাকে জেনারেল ছিয়ানির ডানহাত বলে মনে করা হয়, তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদ দেয়া হয়েছে।

কর্নেল আবদুরাহমানে আমাদৌ, ২৬শে জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে যিনি রাষ্ট্রীয় টিভিতে বেশিরভাগ সরকারি ঘোষণা পাঠ করছেন, তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

সেনা শাসকরা ইতোমধ্যেই সামরিক বাহিনীতে নতুন অধিনায়কদের নাম ঘোষণা করেছে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমের প্রশাসনে কাজ করা বেশিরভাগ সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/