সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বদলে যাবে ঢাকা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:০৬ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৮:০৫ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৩ শনিবার
আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন-৩ এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল।
এই আসন্ন পরিবর্তনের ফলে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের মধ্যে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে উত্তরা- মীরপুর ও গাজীপুর এলাকার বাসিন্দারাও শহরের মধ্যে যাতায়াতের এ উন্নতি উপভোগ করতে পারবেন।
এছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আসন্ন উদ্বোধনও সনযুক্তি আরও বাড়াবে। পাশাপাশি বিমানবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের প্রবেশ ও প্রস্থানকে সহজতর করবে।
ঢাকাবাসীর দৈনন্দিন যাতায়াত ও আকাশপথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও ইতিবাচকভাবে ভালো করার কথা স্বীকার করে বিশ্লেষকেরা এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে বেশ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, মহাখালী ও তেজগাঁও হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার বিস্তৃত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সেপ্টেম্বরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এই এক্সপ্রেসওয়েটি রাজধানীর ব্যস্ত সড়কগুলোর বিকল্প সড়ক হিসেবে কাজ করবে। ফলে যানজট ও সময়ের অপচয় কমে আসবে।
বহুল প্রত্যাশিত এমআরটি লাইন-৬ অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মুহাম্মদ মফিদুর রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধনও ওই সময়ই করা হবে।
এছাড়াও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গাজীপুরের সঙ্গে বিমানবন্দরের সংযোগকারী বিআরটির পুরো ২০.৫ কিলোমিটার অংশ সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চল। দেশের জিডিপিতে এ অঞ্চলের অবদান প্রায় ৩৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে এমআরটি প্রকল্পসমূহের মালিকানাধীন কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ কোম্পানির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ হাজার জনসংখ্যার ঘনত্ব থাকা সত্ত্বেও ঢাকা মহানগরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সড়কঘনত্ব মাত্র ৬.১২ কিলোমিটার।
বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় যানবাহনের গড় গতি ঘণ্টায় মাত্র ৬.৪ কিলোমিটারে নেমে এসেছে, যা হাঁটার গতির চেয়ে সামান্য বেশি। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে ঢাকায় যানজটের কারণে বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পগুলো একই সময়ে চালু হলে ঢাকার যানজট পরিস্থিতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ার প্রত্যাশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
'ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে চলমান বেশ কিছু প্রকল্প আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে—এটা ভালো খবর,' বলেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান।
'ঢাকা শহরে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি ট্রিপ দেওয়া হয়, এবং গণপরিবহন ব্যবস্থাই যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান। বিআরটি ও এমআরটি প্রকল্পগুলো ঢাকার যানজট কমাতে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়,' যোগ করেন তিনি।
এমএম//