ফুলবাড়ী দিবস আজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৩ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩ শনিবার
আজ ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী দিবস। ১৭ বছর আগে ২০০৬ সালের এই দিনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত খনন পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরতদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হন।
ফুলবাড়ীতে কয়লা খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নভিত্তিক কোম্পানি বিএইচপির সঙ্গে চুক্তি করে তৎকালীন সরকার। ১৯৯৭ সালে ফুলবাড়ীতে কয়লার সন্ধান পায় কোম্পানিটি। পরে এশিয়া এনার্জির সঙ্গে কয়লা উত্তোলনে সরকার ৩০ বছর মেয়াদি একটি অসম চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, উত্তোলিত কয়লার মাত্র ৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ, ৯৪ শতাংশ পাবে এশিয়া এনার্জি, যার ৮০ শতাংশ তারা রপ্তানি করবে।
প্রস্তাবিত কয়লা খনি হলে পুরো ফুলবাড়ী শহরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গিয়ে কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়ত। এসব বিবেচনায় পরিবেশবাদীরা সোচ্চার হন। গঠিত হয় ‘ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটি’। শুরু হয় আন্দোলন। দাবি ছিল– ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জির সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, ফুলবাড়ীতে কোনো উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি হবে না।
২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেয়। ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পার্বতীপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ছোট যমুনা সেতুর পূর্ব পাশে পুলিশ ও বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) ওই মিছিলে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আমিনুল ইসলাম আমিন ও মো. সালেকিন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তরিকুল ইসলাম নিহত হন। শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের হরতাল-অবরোধ। ৩০ আগস্ট ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি সই হয়।
তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং ফুলবাড়ীর সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে।
এমএম//