বিশ্বে মুসলিমের অনৈক্য রোধে আলা হযরতের দর্শন অনুসরণের বিকল্প নাই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২১ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩ শনিবার
ঢাকায় অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো বলেছেন, আজকে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য হানাহানি। ইসলামকে যে যেভাবে ইচ্ছা অপব্যাখ্যা করে মুসলিম জাতিকে বিভক্ত করেছে। এই বিভক্তি, অপব্যাখ্যারোধ করে বিশ্ব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ করতে বিশ্ববরেন্য দার্শনিক ইমাম আহমদ রেজা খান ব্রেরলভী (আলা হজরত) এর আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নাই।
ইমাম আ'যম ও আ'লা হযরত গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে রাজধানী ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ‘লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী (রহ.)’র ১০৫ তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে আ‘লা হযরত কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিষদের আহবায়ক উপাধ্যক্ষ মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হকের আহ্বানে,আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য শাইখুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সের উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন- পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান এবং প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমান। প্রধান আলোচক ছিলেন, আলা হযরতের বংশধর, বিশিষ্ট ইসলামিক মুফতি তৌসিফ রেযা খান কাদেরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- শ্রীলঙ্কা হতে আগত আল্লামা হাফেজ এহসান ইকবাল কাদেরী, ভারতের মুর্শিদাবাদ হতে আল্লামা মুফতি আলিমুদ্দীন রেজভী।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আল্লামা মুফতি তৌসিফ রেযা খান কাদেরী বলেন, আলা হজরত ইমাম আহমদ রেজা খান ছিলেন চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ। বিশ্বব্যাপী ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রচার- প্রসারে যুগে যুগে যেসব মহান মনীষীরা বিশ্বের সুন্নী জনতার কাছে চিরস্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন তাদের মধ্যে আলা হজরত অন্যতম। তিনি সমগ্র জীবনকে জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের পাশাপাশি কুরআন-হাদিস, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতিসহ বিজ্ঞানের বহুবিধ শাখায় সদর্পে বিচরণ করেছেন। বিশেষত জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকমুক্ত ইসলামের মৌলিক দর্শন অনুসরণের মধ্যে দিয়ে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজ গঠনে তিনি বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমান বলেন, ইমাম আহমদ রেযা (রা.) ইংরেজ শাসন শোষণের দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে এতদাঞ্চলের মুসলমানদের ঈমান, আক্বীদা, রাজনীতি, অর্থনীতি প্রভৃতি অঙ্গনে যে বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছেন তা আজ ঐতিহাসিক সত্যে পরিণত হতে চলছে। এতদাঞ্চলের মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় একদিকে বৃটিশ উপনিবেশের কঠোর বিরোধিতা করেছেন। অন্যদিকে বৃটিশ বিরোধিতার নামে ভারতবর্ষের অমুসলিমদের সাথে ধর্মীয় মিতালী এবং আনুকূল্য প্রদর্শনেরও বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি দেড় হাজারের মতো পুস্তক রচনা তাঁর অনবদ্য অনন্য কর্ম। তাঁর রচিত নাতি- কালামের সমগ্র শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুমিন মুসলমানদের হৃদয়ে নবি প্রেমের রসদ সরবরাহ করতে থাকবে।
আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, আলা হজরত এমন এক জ্ঞান ভান্ডার যার জীবন কর্মের উপর অর্ধশত পিএইচডি গবেষণা এবং আরও অর্ধশত চলমান। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অতুল গভীর সমুদ্র এ মহামনীষীকে নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতেও একটি গবেষণা সম্পন্ন বহুবিধ জ্ঞানের এই ভান্ডারকে বাংলাদেশের আপামর জনতার সামনে তুলে ধরার জন্য তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান।
কনফারেন্সে আরো বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ স.উ.ম.আবদুস সামাদ, আল্লামা মুফতি মাহমুদুল হাসান কাদেরী, ড.নাছির উদ্দিন নঈমী, মাওলানা মুফতি নাজমুস সায়াদাত ফয়েজী, ড. মাসুম বাকি বিল্লাহ, মাওলানা আবদুল হাকিম, মাওলানা আবু নাছের মোহাম্মদ মুসা, সাইফুদ্দিন আহমাদ ও আজাদ হোসাইন প্রমুখ।
এসবি/