মূল্যস্ফীতিতে ব্যাংকবিমুখ হচ্ছে মানুষ (ভিডিও)
মেহেদী হাসান
প্রকাশিত : ১০:৫৬ এএম, ৩০ আগস্ট ২০২৩ বুধবার | আপডেট: ১১:০৯ এএম, ৩০ আগস্ট ২০২৩ বুধবার
মূল্যস্ফীতির চাপসহ নানা কারণে মানুষের মাঝে নগদ অর্থ ধরে রাখার প্রবণতা বেড়েছে। ব্যাংক-ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থ ব্যাংকে ফেরাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সুদহার বাড়ালে বাজারে থাকা অতিরিক্ত অর্থ ফেরানো কঠিন হবে না।
দৈনন্দিন ব্যয়সহ নানা চাহিদা মেটাতে সাধারণত বাজারে থাকা মোট অর্থের ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষের হাতে থাকে। তবে এখন তা ১৬ শতাংশে উঠে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ হিসাব বলছে, গত জুন শেষে মানুষের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা।
যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বাড়ছে, সেখানে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়ে যাওয়া কোনো স্বভাবিক ঘটনা মনে করছেন না ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সম্প্রতি ব্যাংকার্স মিটিংয়ে মানুষের হাতে থাকা বাড়তি নগদ অর্থ ফের ব্যাংকে ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকারদের তাগিদ দেন গভর্নর। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এখন সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি চলছে, তাই ব্যাংকে তারল্য প্রবাহ কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, “মূল্যস্ফীতি কন্ট্রোল করা মনিটরিং পলিসির উদ্দেশ্য। সেই মনিটরিং পলিসিতে মানি সাপ্লাই নিয়ন্ত্রণে রেখে দ্রব্যের মূল্যস্তর সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছি।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেলে মানুষের মাঝে ব্যাংকে টাকা রাখার প্রবণতা কমে যায়। মানুষের হাতে থাকা টাকা ব্যাংকে ফেরাতে চাইলে এখন অবশ্যই আমানতের সুদহার বাড়াতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “মানুষের যদি আস্থা ব্যাংকের উপর কম থাকে, ব্যাংকগুলো অনেক রকমের ট্যাক্স আদায় করছে, চার্জ আদায় করছে- এতে আসল টাকাই থাকছেনা, মূল টাকা কমে যাচ্ছে। এসব কারণে মানুষ টাকা সরিয়ে রাখে। এই টাকা ব্যাংকে নেয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সুদহার বাড়ানো। এটা করলেই আস্তে আস্তে টাকা ব্যাংকে ফেরত যাবে।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে ব্যাংক-ব্যবস্থায় অর্থপ্রবাহ বাড়বে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকে তারল্য বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বলে মত এই অর্থনীতিবিদের।
এএইচ