মোংলা-খুলনা রেল চলাচল অক্টোবরে
আবুল হাসান, মোংলা থেকে
প্রকাশিত : ০১:৪৭ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়নের ডানায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও একটি পালক। নানা চরাই-উৎরাই ও সময়ক্ষেপণ শেষে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে চালু হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌ-বন্দর মোংলার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় রেললাইন পরিদর্শনে এসে মোংলা-খুলনা রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আরিফুজ্জামান এসব কথা বলেন।
নতুন এই রেল রুটটি আর্ন্তজাতিক রেল রুট হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মোংলা-খুলনা রেলপথের নির্মাণ কাজ এখন একেবারেই শেষের পথে। আগামী অক্টোবরের শেষে খুলনা-মোংলা রেলপথ (ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দরের দিগরাজ) দিয়ে রেল চলাচল শুরুর পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছে কাজ। রেলপথের ৯৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি মাত্র দুই শতাংশ রেলপথ ও কিছু ফিনিশিংয়ের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই এসব কাজ সম্পন্ন হবে।
এ প্রকল্পে রেল চলাচল শুরু হলে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
প্রকল্প পরিচালক মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় মোংলা বন্দর থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় ও সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর জেটি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। শুরুতে প্রকল্প মেয়াদ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোংলা-খুলনা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
তবে দ্বিতীয় দফা সংশোধনের পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। সেই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণ কাজ করেছে। বাকি কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ মিঠু, এইচ এম দুলাল ও মশউর রহমান জানান, বর্তমান সরকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য যেমন পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। তেমনি নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এতে গার্মেন্টস পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য যেমন কম খরচে মোংলা বন্দর থেকে পরিবহন করা যাবে। তেমনি মোংলা বন্দর দিয়ে রপ্তানিও করা যাবে। এতে ব্যবসা বাণিজ্যের আরও
গতি বেড়ে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে।
বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনের সংসদ সদস্য ও উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিক। রেললাইনটি মোংলা বন্দর পর্যন্ত সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে মোংলা বন্দরের সঙ্গে সারা দেশ এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে মোংলা বন্দরের সঙ্গে পণ্য পরিবহনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ করে দেশের সাদা সোনা বলে খ্যাত চিংড়ি রপ্তানি হয় চট্রগ্রাম বন্দর দিয়ে এবার সেই জটিলতার নিরসন হবে বলে জানান তিনি।
এএইচ