ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ভবন নির্মাণে পাল্লা দিয়ে চলছে আইন ভাঙার প্রতিযোগিতা (ভিডিও)

সাইদুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১১:১৪ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার

রাজধানীর ৯০ শতাংশের বেশি ভবনই গড়ে উঠেছে নির্মাণ আইন না মেনে। নকশা আর বাস্তব নির্মাণ একেবারেই আলাদা। নতুন করে যারা নির্মাণ কাজ করছেন তারাও মানছেন না আইন। এসব নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানও কোন ফলাফল নেই। পরিকল্পিত নাগরায়নে রাজউক ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। 

রজধানী জুড়ে পাল্লা দিয়ে চলছে নির্মাণ আইন ভাঙার প্রতিযোগিতা। এগুলো দেখার জন্য পল্লবী মহিলা কলেজের পেছনে নির্মাণ কাজ চলছে এমন একটি ভবনে  যাই। রাস্তার ওপর পিলার এমনটি চোখে পড়লো আমাদের। 

পাশের ড্রেনের কিছু অংশও দখল করে নেয়া হয়েছে। ওপরের সবগুলো বারান্দা রাস্তার ওপর ঝুলছে।  

নকশায় সামনের রাস্তায় ৫ ফিটের বেশি ছাড়ার কথা থাকলেও পিলার রাস্তার ওপর। চারদিকের যতটুকু ছাড়ার কথা একটুও ছাড়া হয়নি। উল্টো দখল করে নেয়া হয়েছে। 

নকশা না মেনে নির্মাণ কাজের কথা স্বীকার করেন মালিকদের একজন ছগির আহমেদ। তিনি বলেন, সবগুলো জানালা নকশার বাইরে। কিন্তু এ নিয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি তিনি। 

পল্লবী মহিলা কলেজের পেছনে আরও একটি ভবনে দেখা গেলো নকশা বর্হিভূত নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। 

তবে, রাজউকের এ পরিচালক বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। 

জোন-৩ পরিচালক তাজিনা সরোয়ার বলেন, “আমাদের কাছ থেকে প্ল্যানিং নিয়ে যদি সেটার ব্যতয় করে তাহলে সেটা সে নিজ দায়িত্বে করছে। এই এখতিয়ার তো তাকে কেউ দেয়নি। সে অবশ্যই অবৈধ কাজ করছে। যারা অবৈধভাবে কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

ভবন নির্মাণের সময় কেন তদারকি হয় না এমন প্রশ্ন এ নগর পরিকল্পনাবিদদের। তারা বলেন, গাফিলতি আর যোগসাজসের জন্য আইনের বাস্তবায়ন নেই। 

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “একটা এলাকায় তো হাজার হাজার ভবন হয়না। ঢাকার কোনো জোনাল এলাকায় হয়তো দুই-চারশ’ ভবন। সেটা তো আধা ঘণ্টার পরিদর্শনে শেষ হওয়ার কথা। তাহলে কেন হচ্ছেনা? আসলে মূল বিষয়টা হচ্ছে এর পেছনে বড় একটা সিন্ডিকেট। তারা অর্থ বাণিজ্য ও দুর্নীতির সংযোগ, এটাই হচ্ছে মূল কারণ। বার বার যে কথাটা বলা হয় লোকবল নেই কিন্তু ঢাকার প্রতিটা এলাকা প্রতিমাসেই পরিদর্শন করা সম্ভব। গাড়ী তো রাজউকের পক্ষ থেকে আছেই।”

রাজধানীর আশপাশের নতুন এলাকাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ তা জানেন রাজউকের এই মুখপাত্র। তিনি বলছেন, ড্যাপ বাস্তবায়ন করা হলে সব পরিকল্পনার আওতায় আসবে। 

রাজউক মুখপাত্র মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “অনুমদিত নকশার ব্যতয় করে যে কালচার তৈরি হয়েছিল সে কালচারটা রোধ করা হয়তো একটু কঠিন। তবে রাজউকের পক্ষ থেকে আমরা সমন্বিতভাবে এ কার্যক্রমগুলো গ্রহণ করেছি, আশা করি অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ কমে যাবে।

ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিধিবর্হিভূত কার্যক্রম রোধ করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

এএইচ