ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে বাজারে (ভিডিও)

তৌহিদুর রহমান

প্রকাশিত : ১০:১০ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বুধবার

দাম বেধে দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না পণ্যের দাম। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, বাজারে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। এদিকে ক্যাব বলছে, বাজারে অর্থের সরবরাহ কমানোসহ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য কৌশলের প্রয়োগ জরুরি।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে আমদানিনির্ভর সব পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। কিন্তু দেশে উৎপাদিত পণ্য যেমন আলু, পেঁয়াজ ও ডাবের দামও বেড়েছে অস্বাভাবিক।  

এই অবস্থায় তেল, চিনির সাথে আলু, পেঁয়াজ, ডিম ও ডাবেরও দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। বেধে দেয়া মূল্য কার্যকরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অভিযান জোরদার করেছে। বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করায় জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের।  

যদিও অভিযানের ফলাফল ও সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন আছে সাধারণ ক্রেতাদের।

ক্রেতারা জানান, ওনারা যখনই বলবে এটা বেশি দামে কেনা তখনই তাকে শাস্তি দিতে হবে। অর্থাৎ দেশের আইন মানেনা, নির্ধারিত দামেই তাকে বিক্রি করতে হবে।

ডাব ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগে দিনে ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা চাঁদা দিলেই হতো। কিন্তু এখন প্রতিদিন কয়েক দফায় অনেক বেশি চাঁদা দিতে হচ্ছে।

ডাব ব্যবসায়ী জানান, আগে দিচ্ছিলাম ১শ’ টাকা কিন্তু এখন ১৫০ টাকা দিতে হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন ৫-৬ জনকে দিতে হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, বাজার ব্যবস্থাপনায় গলদ আছে। অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, “কাওরান বাজারের স্পেসগুলো দিনে চারবার বিক্রি হয়। সকালবেলা এক দলকে বিক্রি করা হয়, যারা কিছু সবজি নিয়ে বসে। দুপুরের পর এখানে কাপড়-চোপড় নিয়ে বসে, সন্ধ্যার পর এখানে আরেক দল বসে এবং রাতের বেলা যে ট্রাকগুলো আসে সেই মাল নামানো হয়। একদিনে চারবার টোল আদায় করা হচ্ছে। এই জায়গাটায়ই সমস্যা।”

নিয়মনীতি না মেনে পণ্যের দাম বাড়িয়ে কিছু ব্যবসায়ী আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি । 

মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, “টোট্যাল বাজার ব্যবস্থাপনাই ভোরের ঝড়া পাতার মতো।”

বাজেট বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার বাড়তি ঋণ নেয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে মনে করছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব। বাজারে টাকার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ ক্যাব সভাপতির। 

ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “৫ লাখ কোটি টাকা অতিরিক্ত বাজারে এসেছে গত অর্থ বছরে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যে উন্নয়ন বাজেটের অর্থায়ন অথবা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যয়ের অর্থায়ন, এটার লাগাম টানতে হবে। দাম নির্ধারণ করে উচ্চ  মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।”

পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পরিবহন, ফুটপাত ও দোকানে চাঁদাবাজি বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। 

এএইচ