ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ডিজিটাল নোম্যাড ৭৩ শতাংশ তরুণের স্বপ্নের ক্যারিয়ার (ভিডিও)

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১১:১৩ এএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রবিবার

বিশ্বজুড়ে আকর্ষণীয় পেশায় পরিণত নিচ্ছে ‘ডিজিটাল নোম্যাড’। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এই ডিজিটাল যাযাবরদের অবদান প্রায় ৮শ’ বিলিয়ন ডলার। গবেষণা বলছে, এটা এখন বিশ্বের প্রায় ৭৩ শতাংশ তরুণের স্বপ্নের ক্যারিয়ার। অনেক দেশ ডিজিটাল নোম্যাডদের টানছে ফ্রি-ভিসা সুবিধা দিয়ে। বাংলাদেশেও ডিজিটাল নোম্যাড পেশাকে জনপ্রিয় করার পক্ষে সংশ্লিষ্টরা।

মাত্র ১২ হাজার বছর! মানুষ আবারও ফিরে যাচ্ছে সেই যাযাবর দুনিয়ায়। কৃষি বিপ্লবের পর ধীরে ধীরে কর্মের ঘেরাটোপে বন্দি হওয়া মানুষ ভাঙছে কর্মঘন্টা কিংবা দৈনন্দিন রুটিন। অফিস ওয়ার্কফ্রেমের বাইরে এসে শৃঙ্খলহীন পেশা আর স্বাচ্ছন্দের স্বাপ্নিক জীবন যেন ডাকছে হাতছানি দিয়ে। 

নির্দিষ্ট স্থান, অঞ্চল কিংবা দেশে আটকে না থেকে যেকোনও জায়গায় বসে কাজ করার ইচ্ছেটা ডানা মেলে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট আবিস্কারের পর থেকেই। একসাথে বিশ্ব-প্রকৃতি অবলোকন, মুক্ত ও স্বাধীন জীবিকা নির্বাহ এবং ভিনদেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি ও জীবনমান উপভোগ করার প্রবণতা বাড়তে থাকে মানুষের। 

এটা সম্ভব হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি বা ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ সেবা বিকাশের কারণেই। ১৯৯৭ সালে এই কথাই বলেছেন দুই স্বাপ্নিক ব্যক্তি সুগিয়ো ম্যাকিমোটো এবং ডেভিড ম্যানারস ডিজিটাল নোম্যাড নামক এক প্রযুক্তিবিষয়ক গ্রন্থে। তারও আগে ১৯৬৪ সালে ভবিষ্যতবাদি আর্থার সি ক্লার্ক এবং ১৯৮১ সালে ইনটেলের প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট নয়েস ডিজিটাল নোম্যাড পেশার কথা বলে গেছেন।  

ল্যাপটপ আর তারবিহীন ইন্টারনেট হলে যেকোনো স্থানে থেকেই কাজ করতে পারেন ডিজিটাল নোম্যাডরা। তারা পৃথিবীর নানাপ্রান্তে ঘুরে বেড়ান আর নোমেডিক লাইফস্টাইল উপভোগ করেন। ল্যাপটপ-স্মার্টফোন আর ইজি একসেস ইন্টারনেট ব্যবহার করে গ্রাফিক্স ডিজাইন, সফটওয়্যার ইনোভেশন, রাইটিং, মিডিয়া টিউটোরিং, কনন্টেট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করেন তারা।

ডিজিটাল নোম্যাড মনজুরুল মোর্শেদ বলেন, “আমি যখনই বাইরে থাকি বা যে জায়গায় থাকি না কেনো সফটওয়্যার ও ডিজিটাল টুলস দিয়ে আমি আমার কোম্পানির সবাইকে মনিটর করতে পারছি।”

ডিজিটাল নোম্যাডদের এক জরিপে দেখা যায়, ৬০ শতাংশ ব্যক্তি ৫০ হাজার ডলার মাসে আয় করেন। ২২ শতাংশ আয় করেন প্রায় ১ লাখ ডলার আর ১৮ শতাংশের আয় ৬ অংকের ঘরে। 

মনজুরুল মোর্শেদ বলেন, “এটা ফ্রিডম লাইফস্টাইল, কোনো গণ্ডির মধ্যে আটকে থাকছেনা। সেজন্যই সবাই ডিজিটাল নোম্যাড হতে যাচ্ছে।”

ধরাবাঁধা আর ছক মেনে যারা জীবন কাটাতে চান না তাদের জন্য ফ্রি ভিসা দিচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ। নোম্যাডদের জন্য গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রও। 

তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জুবায়ের কবির বলেন, “গ্লোবাল ইকোনমিতে এদের কন্ট্রিবিউশন প্রায় ৮শ’ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।”

বাংলাদেশেও এমন নোম্যাড হাব গড়ে তুলতে প্রয়োজন ট্যুরিজমসহ আনুসাঙ্গিক সুবিধাদি। আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ সরকারকে এগিয়ে আসার পরামর্শও দেন এই বিশেষজ্ঞ।

জুবায়ের কবির বলেন, “হয়তো সে আর্ন করতেছে ইউএসএ থেকে কিন্তু সে আমার দেশে কেনো আসবে, আসবে এজন্য যে এখানের কালচার ভালো, নতুন কিছু শেখার আছে, ট্যুরিজমের ব্যাপারগুলো আছে। তো এই জাতীয় সেক্টরগুলোকে ডিভেলপ না করলে গ্লোবাল পিপল আসবে না।”

বিশ্বে নোম্যানের সংখ্যা এখন সাড়ে তিন কোটি। ২০৩৫ সালে এ সংখ্যা উন্নীত হবে ১শ’ কোটিতে। 

এএইচ