ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২১ ১৪৩১

ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কোনো যৌক্তিতা নেই: প্রধানমন্ত্রী (ভিডিও)

প্রণব চক্রবর্তী

প্রকাশিত : ০৩:৫১ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৩:৫৩ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার

বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কোনো যৌক্তিতা নেই বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভয়েস অমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন অনেক কর্মস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকা ভিসা না দিলে কিছু যায় আসে না। বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে আদালতের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদান শেষে আমেরিকায় ছেলের সঙ্গে কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ফাঁকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভয়েস অব আমেরিকাকে। 

এ সময় জাতীয় নির্বাচন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসাসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করেছে বর্তমান সরকার। তারপরও কেন নিষেধাজ্ঞা প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয় তার জন্য যতো রকমের সংস্কার দরকার সেটা তো আমরাই করেছি। আজকে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, মানুষকে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা- আন্দোলন-সংগ্রাম করে আজকে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশে নিয়ে আসতে পেরেছি। এখন মানুষ ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। সেটা আমরা করেছি। সেক্ষেত্রে হঠাৎ একটা স্যাংশন দেবার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করিনা।”

তিনি বলেন, “আমার কোনো আইনরক্ষাকারী সংস্থা সেটা র‌্যাব হোক, পুলিশ হোক আর যেটাই হোক কেউ যদি কোনো রকম অন্যায় করে আমাদের দেশে তাদের বিচার হয়। এই বিচারে কেউ রেহাই পায় না।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে আদালতের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “পৃথিবীর কোন দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে। আদালতের উপর হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে হ্যাঁ, তার জন্য যেটুকু করতে পেরেছি সরকারের ক্ষমতা বলে সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকার পারমিশনটা দেওয়া হয়েছে এবং সে নিজেই এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাংলাদেশে সবচেয়ে দামী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যদি তাদের বাইরে যেতে হয় তখন তার বাসায় থাকার পারমিশন প্রত্যাহার করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে এবং কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে, কোর্ট যদি রায় দেয় তখন সে যেতে পারবে।”

বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং গুম সংক্রান্ত জাতিসংঘের রিপোর্ট নিয়েও সরকারের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকারী, খুনি বা বোমা হামলাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, অগ্নি সন্ত্রাসী- তাদের ব্যাপারে তো কোনো কথা নেই। যখনই মানুষ খেয়ে-পড়ে একটু ভালো থাকবে তখনই এই ধরনের প্রশ্ন উঠবে। কাদের মানবাধিকার, মানবাধিকার লংঘনকারীর মানবাধিকার নিয়ে তারা চিহ্নিত। কিন্তু আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি আমাদের কোনো মানবাধিকার নেই। সে ব্যাপারে কথা নেই, অদ্ভূত একটা একটা রিপোর্ট তৈরি করে দিলে তো হলো না। সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে।” 

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গও উঠে আসে সাক্ষাৎকারে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠাতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “মাদকের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত হচ্ছে, মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। নানা ধরনের ঘটনা এখন ঘটছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের সাধ্যমত। কিন্তু আন্তর্জাতিক সহযোগিতাগুলো কমে যাচ্ছে।”

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করবে বলেও আশাবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে বিশ্বকাপে ভালো খেলা দেখাতে পারবো। আমি আশাবাদী সবসময়।”

এএইচ