ভূয়া এসপি আসল এসপির হাতে স্বামীসহ আটক
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৪০ এএম, ১ অক্টোবর ২০২৩ রবিবার
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র পুলিশ সুপারের নাম ভাঙিয়ে যশোরের শার্শায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে যশোর পিবিআই।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের মৈশর চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী মাদারীপুরের মৈশর চর এলাকার খাদিজা।
আহসান হাবিব রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে কখনো নিজেই মোবাইলের মাধ্যমে ভয়েজ পাল্টে মেয়ে সেজে কথা বলতেন আবার কখনো তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন করে প্রতারণা করতেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক আজিজুল হক জানান, শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলামের কাছে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ০১৩১৪-৫৪৭৪৬৬ নম্বর থেকে মোবাইল ফোন করেন এক নারী।
এ সময় তিনি নিজেকে পিবিআই এসপি দাবি করে বলেন, আমি পিবিআই যশোর জেলার এসপি রেশমা শারমিন বলছি। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। যশোর জেলার শার্শার কায়বা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন যা করছে এটা কি ঠিক করছে? তার চাইতে টিংকু চেয়ারম্যান ভালো ছিলো না? আগামীতে আপনাকে চেয়ারম্যানের নমিনেশন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব। আপনার প্রতিপক্ষের কিছু লোকের নাম দেন।
তখন শরিফুল ইসলাম তাকে কিছু লোকের নাম দেন। এরপর এসপি পরিচয়দানকারী ওই নারী শরিফুল ইসলামকে বলেন, আমার সাব-ইনসপেক্টর রবিউল ইসলামের সাথে কথা বলেন।
এই বলে অপরপ্রান্ত থেকে মোবাইল ফোনটি এক পুরুষ ব্যক্তির কাছে দেওয়া হয়। এ সময় নিজেকে এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে শরিফুল ইসলামকে বলেন, এসপি স্যার এ বিষয়ে ঢাকায় যাবে। তাই ২ লাখ টাকা দিতে হবে। এতে সন্দেহ হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম বিষয়টি পিবিআই কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে অবস্থান শনাক্তের পর গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের মৈশর চর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসআই নুর জামালের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে পিবিআই’র এসপি পরিচয়দানকারী খাদিজা নামে এক নারীকে নিজ পিতার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বাড়ি থেকে তার সহযোগী এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয়দানকারী স্বামী আহসান হাবিবকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পিবিআই কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করেন।
পিবিআই যশোরের এসপি রেশমা শারমিন জানান, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারকদ্বয় মাদারীপুরের হায়দার কাজী জুট মিলে চাকরি করেন। এর আড়ালে তারা প্রতারণা ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত। এরা মূলত বিভিন্ন লোকজনের কাছে ভূয়া পরিচয় দিয়ে নানা ভাবে প্রতারণা করে আসছে।
আহসান হাবিব একজন চিহ্নিত প্রতারক। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা থানায় ১০টি এবং ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় একটি মোট ১১টি প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা
এএইচ