ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

শুল্কমুক্ত সুবিধার সুতা-কাপড় বাজারে বিক্রির অভিযোগ (ভিডিও)

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : ১১:২৬ এএম, ৩ অক্টোবর ২০২৩ মঙ্গলবার

শুল্কমুক্ত সুবিধা বা বন্ডের আওতায় আমদানি করা সুতা-কাপড় বাজারে বিক্রির অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশেন-বিটিএমএ। আর এতে দেশীয় সুতা ও কাপড় উৎপাদকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে মনে করছে সংগঠনটি। তবে বিটিএমএ’র অভিযোগ ভিত্তিহীন বলছে দেশের তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। 

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন-বিটিএমএ’র তথ্য বলছে, দেশের বাজারে বছরে কাপড়ের চাহিদা ৮শ’ কোটি মিটার। বিটিএমএ’র সদস্য ৫১৯ কারখানা এ কাপড়ের পুরোটাই উৎপাদনে সক্ষম। তাই স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষায় সরকার সুতা আমদানিতে সাড়ে ৩৭ শতাংশ এবং ফেব্রিক আমদানিতে ৮৯ শতাংশ থেকে ১২২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। তবে রপ্তানীমুখী তৈরি পোশাক শিল্প শুল্কমুক্ত সুবিধায় সুতা ও কাপড় আমদানির সুযোগ পায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে সম্প্রতি বিটিএমএ অভিযোগ করেছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা এসব সুতা ও কাপড়ের একটা বড় অংশ অবৈধভাবে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। শুল্কমুক্তভাবে আমদানি হওয়ায় এসব সুতা ও কাপড়ের দাম স্থানীয় পণ্যের চাইতে অন্তত ২০ শতাংশ কম। ফলে এমনিতেই গ্যাস ও ডলার সংকটে নাজেহাল দেশের বস্ত্র শিল্প নতুন করে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। কারখানাগুলোতে বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সুতা ও কাপড় অবিক্রিত পড়ে রয়েছে।

বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, “আমাদের হিসাব মতে, বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের মাল চোরাকারবারি হয়। আমাদের মিলগুলো যখন অলস বসে থাকে অথচ সে বাজারটা আমরা পাচ্ছিনা। সেই বাজার দখল করেছে বিদেশি কাপড়গুলো।”

কারা বন্ড সুবিধায় আমদানি করা পণ্য স্থানীয় বাজার বিক্রি করছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি বিটিএমএর। 

মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, “বাজারে যেসমস্ত সুতাগুলো পাওয়া যায় এনবিআরে গিয়ে চেক করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পোর্টালে চেক করেন কি পরিমাণে সুতা ইম্পোর্ট হয়েছে আর কি পরিমাণে সুতা বাজারে আছে। এগুলো কারা আনলো।”

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত তৈরি পোশাক খাতের সব শেষ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী এ শিল্পে স্থানীয় মূল্যসংযোজন দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা একটি রেকর্ড। স্থানীয় সুতা-কাপড়সহ কাঁচামাল বেশি ব্যবহারের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি বিজিএমইএর। ফলে বিটিএমএর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলছে তারা। 

বিজিএমইএ সভাপতি ফরুক হাসান বলেন, “এক কেজি কাপড় আমরা কি দামে কিনে আনি আর বাজারে কতো দামে বিক্রি হয়। ধারেকাছেও নাই, ৫০ শতাংশও দাম পাওয়া যায়না। কে ইম্পোর্ট করে এই কাপড় বিক্রি করবে?”

বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন কথা বলতে রাজি হয়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। 

এএইচ