নকল পোশাক বন্ধে বিদেশি ক্রেতাদের চাপ (ভিডিও)
মেহেদী হাসান
প্রকাশিত : ১২:২০ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২৩ বুধবার
নকল পোশাক উৎপাদন, রপ্তানি ও স্থানীয় বাজারে স্টকলট বিক্রি বন্ধে বিদেশি ক্রেতাদের চাপ জোরালো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে পোশাক শিল্পের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে এখনই এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে বিজিএমইএ নেতাদের দাবি, নকল পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিতে সদস্য কারখানাগুলো জড়িত নয়।
রাজধানীর গুলিস্তানের এনেক্সকো টাওয়ারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান। মালিবাগে রয়েছে তার নিজস্ব পোশাক কারাখানা। বিশ্বের নামিদামি ব্রান্ডের পোশাকের ডিজাইন হুবহু নকল ও লোগো ব্যবহারে করে সেখানে তৈরি করছেন পণ্য। আর এসব পোশাক বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা যেমন তার ক্রেতা, তেমনি তার পণ্য নানাভাবে বিদেশেও যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, পৃথিবীর সব জায়গায় যাচ্ছে, এই পোশাক বেশি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। যেমন সৌদি আরব, দুবাই, কাতার, মালয়েশিয়া ও ইন্ডিয়া।
এই মার্কেটসহ রাজধানীর অনেক মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানে নকল পোশাক ও স্টকলট কোনা-বেচা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন স্টক মাল আছে এবং আমাদের তৈরি মালও আছে। এগুলো মূলত যারা বাইরে যায় তারা কিনে। অনেক সময় বাইরে থেকে লোক আসে, ওনারা কিনে নিয়ে যায় ২শ’ পিচ, ৫শ’ পিস, ১ হাজার পিস। এ রকম অনেক পার্টি আসে।
এভাবে পোশাক নকল করে রপ্তানি করা মেধাস্বত্ব আইনের লঙ্ঘন। তবে বিজিএমইএ নেতাদের দাবি, তাদের কোনো সদস্য প্রতিষ্ঠান বিদেশি ব্রান্ডের নকল পোশাক উৎপাদন বা রপ্তানির সঙ্গে জড়িত নয়।
বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, “প্রত্যেকটা গার্মেন্টসের আরএন নম্বর থাকে, রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ কোম্পানির নাম থেকে শুরু করে সবকিছু থাকে। এটা কোনো অবস্থায়ই যারা রাইট ম্যানুফ্যাকচারদের দ্বারা সম্ভব হবে না।”
এদিকে, আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এসোসিয়েশন ও ফ্রান্সের অপর একটি সংগঠন বাংলাদেশে নকল পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানির অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর-ইউএসটিআরে। এনিয়ে তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেও বিষয়টি অবহিত করেছে ইউএসটিআর।
অভিযোগের সত্যতা মিললে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ, কোটা কমিয়ে দেয়া, এমনকি আমদানি নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তাই ঝুঁকি এড়াতে নকল পোশাক উৎপাদন বন্ধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদের।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “কেউ অভিযোগ করলে সরকারের উচিত তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ এটা হলে ভবিষ্যতে আমাদের দেশে এ ধরনের অর্ডার তারা দিতে চাইবেনা।”
দেশের কতো কারখানা বিদেশি ব্রান্ডের নকল পোশাক উৎপাদন করছে এবং এসব পোশাকের স্থানীয় বাজারের আকার ও রপ্তানি-আয় কতো, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে তার কোনো তথ্য নেই।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “ক্ষতি হলে দেশের হবে, ব্যক্তির হবে না।”
এএইচ