ঢাকা, শুক্রবার   ০৮ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২৩ ১৪৩১

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা মশামুক্ত ঘোষণা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:১৬ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৩ রবিবার

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা মশামুক্ত হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাপক মশা নিধন অভিযান চালানো হয়েছে এই আবাসিক এলাকায়। 

বসুন্ধরাবাসী জানান বছর দুয়েক আগেও ছিলো প্রচুর মশার উৎপাত। তবে এখন সমস্যার সমাধান হয়েছে। বসুন্ধরা শুরু থেকেই পরিবেশবান্ধব 

এলাকা হিসেবে পরিচিত। তবে গেলো কয়েক বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায়িএ বছর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। 

 বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা এখনও চলমান। বিশেষ করে খাল ও জলাশয় প্রবহমান রাখা এবং নিয়মিত পরিষ্কার করা, নর্দমাগুলো সচল রাখা ও নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। খালি প্লটগুলোও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে।

প্রতিদিন সকালে মশার লার্ভা নিধন ও বিকেলে উড়ন্ত মশা নিধনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে নিয়মিত। এতেই সুফল মিলছে বলে জানিয়েছে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ।

বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ জানায়, মশার লার্ভা মারতে তারা সকালে নর্দমা ও জলাশয়ে ওষুধ ছিটাচ্ছে। উড়ন্ত মশা মারতে বিকেলে ফগিং করা হচ্ছে। জলাশয় পরিষ্কারের জন্যও বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়ছে। কিছুদিন পরপর তারা ওষুধও পরিবর্তন করছে।

মশক-বিশেষজ্ঞদের মতে, সব হাউজিং সোসাইটিকে বসুন্ধরার মতো মশা নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসতে হবে।

বসুন্ধরা আই-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের ১৮৭ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মিসেস রঞ্জনা কাশেম বলেন, ‘এক বছর আগেও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ থাকতাম। ব্যাট, কয়েল, স্প্রে ও মশারি ব্যবহার করেও নিস্তার মিলত না। গত তিন বছরে মশা নিয়ন্ত্রণে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে, যার সুফল এখন সবাই ভোগ করছে। এখন মশা নেই বললেই চলে।’

বসুন্ধরা ডি-ব্লকের ৭ নম্বর সড়কের ১২৯ নম্বর বাসার তত্ত্বাবধায়ক মো. আবদুল গনি বলেন, ‘প্রায় আট বছর ধরে এ বাসার দায়িত্ব পালন করছি। ২৪ ঘণ্টাই বাসায় থাকি। শুরুর দিকে অনেক মশা ছিল। কয়েল, স্প্রে, ব্যাট না থাকলে দল বেঁধে মশা হামলা দিত। প্রায় দুই বছর ধরে মশার উপদ্রব কমেছে।’

বসুন্ধরা ডি-ব্লকের বাসিন্দা গৃহবধূ সৈয়দা শাকিলা হায়দার বলেন, ‘দেড় বছর আগেও প্রচুর মশা ছিল বসুন্ধরায়। এখন নেই বললেই চলে। এখন স্বস্তিতে আছি।’

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস এন্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকার অনুমোদিত ও পরিবেশবান্ধব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। মশার প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়াতে মিলেছে সাফল্য।’

তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরায় মশার অন্যতম কারণ ছিল, এ প্রকল্পের ভেতরের খালগুলো প্রবহমান ছিল না। পর্যায়ক্রমে সেগুলোকে প্রবহমান করা হয়েছে। প্রবহমান খালে মশা ডিম পাড়ে না। খালি প্লটগুলোতে জঙ্গল ও জলাবদ্ধ পরিবেশ ছিল; প্লট মালিকদের চিঠি দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। যারা করেনি বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরিষ্কার করেছে।’

কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. করিরুল বাশার বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে এটা ভালো সংবাদ। তাদের মতো অন্য হাউজিং সোসাইটিগুলোও উদ্যোগী হতে পারে। বসুন্ধরা কার্যক্রম অব্যাহত রাখুক।’

এসবি/