ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ইংল্যান্ডের বিদায়, সেমির দৌড়ে টিকে থাকলো অস্ট্রেলিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২৩ রবিবার | আপডেট: ০৯:০৬ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২৩ রবিবার

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত করে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই টিকে থাকলো অস্ট্রেলয়া। বিশ্বকাপে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৩৩ রানে হারিয়েছে ইংলিশদের। এই জয়ে ৭ খেলায় ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থান ধরে রাখলো অজিরা। পক্ষান্তরে এই হারে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলা শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের।

এই হারে দশ দলের টুর্নামেন্টে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকলো ইংল্যান্ড।

প্রথমে ব্যাট করে মার্নাস লাবুশেনের ৭১ রানে ৪৯ দশমিক ৩ ওভারে ২৮৬ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ১১ বল বাকী থাকতে ২৫৩ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

আহমেদাবাদে টস জিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়  ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে দলকে ভালো সূচনা এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। দ্বিতীয় ওভারেই ১১ রান করা  হেডকে পিরিয়ে দেন পেসার ওকস। বেশি দূর যেতে পারেননি ওয়ার্নারও। ব্যক্তিগত ১৫ রানে থামেন তিনি।

৩৮ রানের দুই ওপেনারকে হারানোর পর অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ে ফেরান স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন। দেখেশুনে খেলে ৯৬ বলে ৭৫ রান যোগ করেন তারা। ২২তম ওভারে স্মিথ-লাবুশেনের জুটি ভেঙ্গে ইংল্যান্ডকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার আদিল রশিদ। ৩টি চারে ৫২ বলে ৪৪ রান তুলে আউট হন স্মিথ।

স্মিথের পর পাঁচ নম্বরে নামা জশ ইংলিশকে ৩ রানে আউট করে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন রশিদ। এতে ১১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে অজিরা।

চতুর্থ উইকেটে ক্যামেরন গ্রিনকে নিয়ে দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন লাবুশেন। হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়ার পথে নিজেও ওয়ানডেতে দশম অর্ধশতক করেন লাবুশেন। ৩৩তম ওভারে লাবুশেনকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন পেসার মার্ক উড। ৭টি চারে ৮৩ বলে ৭১ রান করেন লাবুশেন। গ্রিনের সাথে ৫৯ বলে ৬১ রান যোগ করেন এই অজি ব্যাটার।

দলীয় ১৭৮ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে লাবুশেন ফেরার পর অস্ট্রেলিয়ার রান ২শ’ পার করেন গ্রিন ও মার্কাস স্টয়নিস। হাফ-সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আউট হন গ্রিন। পেসার ডেভিড উইলির প্রথম শিকার হওয়ার আগে ৫টি চারে ৫২ বলে ৪৭ রান করেন গ্রিন।

দলের রান আড়াইশ’ যাবার আগে নামের পাশে ৩৫ রান নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন স্টয়নিস। ৪৪তম ওভারের মধ্যে স্বীকৃত ব্যাটারদের বিদায়ের পরও লোয়ার অর্ডারদের দৃঢ়তায় চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। শেষদিকে এডাম জাম্পা ৪টি চারে ১৯ বলে ২৯, অধিনায়ক প্যাট কামিন্স-মিচেল স্টার্কের করা ১০ রানে শেষ পর্যন্ত ৩ বল বাকী থাকতে অলআউট হবার আগে ২৮৬ রান করে অজিরা। 

ইংল্যান্ডের ওকস ৫৪ রানে ৪টি, উড-রশিদ ২টি করে, উইলি-লিভিংস্টোন ১টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই অস্ট্রেলিয়ার পেসার স্টার্কের শিকার হন ইংল্যান্ড ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। তিন নম্বরে নামা জো রুটও সুবিধা করতে পারেননি। দু’বার জীবন পেয়েও ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি স্টার্কের দ্বিতীয় শিকার হওয়া রুট।

১৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার ডেভিড মালান ও বেন স্টোকস। উইকেট সেট হতে শুরুতে সাবধানী হলেও পরের দিকে রানের গতি বাড়িয়ে ২২তম ওভারেই দলের রান তিন অংকে নেন তারা।

২৩তম ওভারের প্রথম বলে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মালান। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৪ বলে ৫০ রান করা মালানকে শিকার করেন অস্ট্রেলিয়াকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন অজি অধিনায়ক কামিন্স।

পাঁচ নম্বরে নেমে স্পিনার জাম্পার শিকার হয়ে ১ রানে বিদায় নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার। ৩ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। এবার মঈন আলিকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন স্টোকস। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিজেও ওয়ানডেতে ২৩তম অর্ধশতক করেন স্টোকস। অর্ধশতকের পর ইনিংস বড় করার চেষ্টা করলেও জাম্পার দ্বিতীয় শিকার হন স্টোকস। ৯০ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৪ রান করেন তিনি।

দলীয় ১৬৯ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে স্টোকস ফেরার পর লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। এরপর ১৮৬ রানে পৌঁছাতে লিয়াম লিভিংস্টোন ও মঈন আলিও বিদায় নেন। লিভিংস্টোনকে ২ রানে কামিন্স ও মঈনকে ৪২ রানে আউট করেন জাম্পা।

শেষদিকে দলের হার এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন ওকস-উইলি ও রশিদ। কিন্তু তাদের ছোট-ছোট ইনিংসেও শেষ রক্ষা হয়নি ইংল্যান্ডের। ১১ বল বাকী থাকতে ২৫৩ রানে অলআউট হয় তারা। ওকস ৩২, উইলি ১৫ ও রশিদ ২০ রান করেন। 

অস্ট্রেলিয়ার জাম্পা ১০ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন। এছাড়া  স্টার্ক-হ্যাজেলউড ও কামিন্স ২টি করে উইকেট নেন।

এএইচ