বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি : পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২২ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২৩ রবিবার
বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক পুলিশ হত্যা, কাকরাইল মসজিদ ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের অন্তর্গত সংসদীয় আসনভিত্তিক যুবলীগের অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অন্তর্গত ঢাকা-১০ আসনের ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসনে গাবতলীতে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। ঢাকা-১০ আসনের ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়ে এসে অবস্থান কর্মসূচি করছি। কারণ একটা তথাকথিত বিরোধী দল যারা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে জোট করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। যারা এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায়। সেই সংগঠন আজকে ২ দিনের অবরোধ দিয়েছে তারা এর আগেও অবরোধ দিয়েছিল। সম্প্রতি তাদের ২ ধরনের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। একটা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের নামে সম্প্রতি তারা জনগণকে ধোকা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন ২৫ অক্টোবরে তারা তাদের পুরোনো সন্ত্রাসী চেহারা দেখিয়েছে। কি ন্যাক্কারজনকভাবে, নির্মমভাবে পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে, তারা লালমনিরহাটে যুবলীগের নেতাকে হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে, হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছে। এভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে। তাদের আরেকটি মুখোশ সেটা হচ্ছে তাদের নেতৃত্ব দেশপ্রেমীর লেবাস পরতে চায়, যেটা নিয়ে তারা গর্ব করে সেই নেতৃত্ব যে কতখানি কাপুরুষ তা আপনারা জানেন। যে নেতা বিদেশে থেকে এসি রুমে বসে রিমোট চেপে চেপে রাজনীতি করে এবং এদেশের তরুণসমাজকে ও যুবসমাজকে বিপথে ধাবিত করে সেটা যে কি ধরণের ভণ্ড ও প্রতারক সেটাও আজকে উন্মোচিত হয়েছে। আপনারা দেখেছেন সম্প্রতি তারা জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা নিয়ে আসছে। এ ভুয়া উপদেষ্টার মাধ্যমে তারা আবারও জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। সুতরাং আমি আগেও বলেছি এরা ভুয়া, প্রতারক রাজনীতিবিদ। তারা এদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা তাদের নেই এ কারণেই তারা সাধারণ জনগণের ওপর চড়াও হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের মাধ্যমেই সৃষ্টি। আমরা কোন কিছুতে ভয় পাই না। এদেশের মাটির অনেক গভীরে আমাদের শিকড়। সুতরাং আমরা ভয় পাই না। এদেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে আছে এবং রাজপথে থেকেই রাজনৈতিক ভূমিকা রাখবে।
শেখ পরশ বলেন, সামনে নির্বাচন তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ আরো বৃদ্ধি পাবে। কারণ তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তাদের আর পিছনে ফেরার পথ নাই। তাই তারা চড়াও হবে। আমাদের সাংবাদিক ভাইদের ওপর তারা চড়াও হয়েছে। ২০০১ সালের পর থেকেই তারা সাংবাদিকদের ওপর অপরিসীম নির্যাতন চালিয়েছে, আজও চালাচ্ছে। তারা বিচার বিভাগে আঘাত হানতে চায়। যারা তাদের অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যার শিকার তাদের পরিবার যেন বিচারালয়ে যেয়ে বিচার চাইতে না পারে সেজন্য বিচার বিভাগের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করার জন্য প্রেসক্লাবে বোমা মেরেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা তো তিনবার ক্ষমতায় ছিল। দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ তাদেরও ছিল কিন্তু কেন তারা তা করে নাই। কারণ তাদের উদ্দেশ্যই ছিল দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিবে এটাই তাদের উদ্দেশ্য। এটা বার বার প্রমাণিত যে, এই সংগঠন স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন। সুতরাং আজকে তাদের নিষিদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি হয়ে পড়েছে। এদেশের যুবসমাজ এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ।
ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসনে গাবতলীতে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা ২০০১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তারা ২১ আাগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে, ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছে। সাংবাদিক মানিক শাহসহ অসংখ্য সাংবাদিকদের হত্যা করেছে তারা। আজ বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সাধারণ মানুষ এবং পরিবহণের ওপর চোরাগুপ্ত হামলা করছে। কারণ প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করার ক্ষমতা তাদের নেই।
তিনি আরও বলেন, জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে কোন রাজনৈতিক দলের সফলতা আসবে না। জনগণ পরিষ্কারভাবে জেনে গেছে বিএনপি একটি ভুয়া ও প্রতারক দল। তারা একটা মিথ্যাচার আর অপপ্রচারকারী দল। বিএনপির চোরাগুপ্ত হামলা প্রতিহত করতে প্রতিটি জেলা-মহানগরে পাড়া-মহল্লায় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে রয়েছে। তারা অগ্নিসন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে পুলিশে সোপর্দ করে দিবে।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের অন্তর্গত ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে সুবাস্তু টাওয়ার, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনে যুবলীগ চত্বর, ফার্মগেইট, ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনে শ্যামলী, ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১০ গোল চত্বর, ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১১ বাস স্ট্যান্ড, ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে মহাখালী কাঁচা বাজার ও ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনে আজমপুর, উত্তরায় এবং ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অন্তর্গত ঢাকা-২ সংসদীয় আসনে ৫৭ নং ওয়ার্ড, কামরাঙ্গীরচর লোহার ব্রীজ, ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনে শ্যামপুর ইকো পার্কের সামনে, ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনে শনিরআখড়া দনিয়া কলেজের সামনে, ঢাকা-৬ সংসদীয় আসনে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে, ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনে চকবাজার মোড়, ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ও ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে কমলাপুর স্কুল এন্ড কলেজ বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্নে সংসদীয় আসন ভিত্তিক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যান্য সংসদীয় আসন ভিত্তিক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এনামুল হক খান, মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, রফিকুল আরম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, এড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পাভেল, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কেআই//