আলু সংরক্ষণ কম হওয়ার সুযোগ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা (ভিডিও)
তৌহিদুর রহমান
প্রকাশিত : ১১:২৬ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার | আপডেট: ১১:৩১ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার
ভারত থেকে আসতে শুরু করেছে আলু। পাইকারি ও ভোক্তা পর্যায়ে কমছে দাম। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দাম নিয়ন্ত্রণে আলু আমদানি ও রপ্তানির সুযোগ সারাবছরই থাকা উচিৎ। একটি স্থায়ী ব্যবস্থা থাকলে মূল্যবৃদ্ধির হঠাৎ প্রবণতা এড়ানো সম্ভব বলেও মনে করছেন তারা। এদিকে, পুরো বছরের জন্য দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরামর্শ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনটির দাবি, এবছর আলু সংরক্ষণ কম হওয়ার সুযোগ নিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয় ১ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার মেট্রিক টন। যা গেলো অর্থবছরের চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন বেশি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে দেশে আলুর চাহিদা ছিল ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টন।
চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হলেও সম্প্রতি কেজিপ্রতি আলুর দাম ৭০ টাকায় উঠে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছে। তারা হিমাগার থেকে চাহিদা অনুসারে আলু ছাড়ছেনা।
হিমাগারের আলু ধারণক্ষমতা ৩০ লাখ টনের বেশি। এবছর সংরক্ষণ করা হয় ২৪ লাখ ৯২ হাজার টন। কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সংরক্ষণ কম হওয়ার সুযোগে দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, “যারা আলু সংরক্ষণ করেছে তারা জানে এবার আলু কম রয়েছে। সেজন্য তারা অতিমুনাফার ফন্দি আঁটে এবং জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের জোরদার মনিটরিং করার দরকার ছিল, তারা সেটি করতে পারেনি।”
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আলু আমদানি করছে। ৭৭টি আবেদনে অন্তত ৫০ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশে আসতে শুরু করেছে আমদানি করা আলু। কমছে দামও।
আলু আমদানি হলে ডলারের ওপর চাপ পড়বে মন্তব্য করে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাম নিয়ন্ত্রণের তাগিদ দেন।
কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, “দেশে এখন ডলারের সংকট রয়েছে এর মধ্যে আমদানি কতটা সম্ভব হবে তা বাস্তবে দেখা যাবে। আলু বাংলাদেশে কখনও আমদানি হয়নি।”
এদিকে, আলুসহ নিত্যপণ্য আমদানির বিষয়টি বাজারের চাহিদার ওপর ছেড়ে দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড আহসন এইচ মনসুর বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অ্যাডহক পলিসিগুলো সমর্থন করিনা। হঠাৎ করে তারা আমদানি করা শুরু করে, তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায়। আমার মতে, কোনো কিছুই বন্ধ রাখা উচিত নয়। সবকিছু সবসময়ই আমদানি করতে পারবে নির্দিষ্ট ট্যাক্স দিয়ে। এই ওপেন ট্রেড নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নাই। যখনই আলুর দাম ভারতের চেয়ে ৪০ শতাংশের উপরে চলে যাবে তখন আলু এমনিতেই চলে আসবে দেশে।”
আলু উৎপাদনের তথ্যে যাতে গরমিল না থাকে সেজন্য আরও সাবধানতার তাগিদও দেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।
এএইচ