ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজ জয় টাইগ্রেসদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:১১ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২৩ শুক্রবার

টাইগ্রেসদের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান নারী দল। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দুই ওপেনার ফারজানা হক ও মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটিং নৈপুণ্যে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওডিআইতেও পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারাল জ্যোতি-নাহিদারা।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) মিরপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ১২৫ রানের রেকর্ড গড়েন মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক। দুই ওপেনারের বিদায়ের পরও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। ২৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে জ্যোতিরা।

এর আগে সিরিজের প্রথমে ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৫ উইকেট হারতে হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বোলারদের নৈপুণ্যে ১৬৯ রানের টার্গেট দিয়ে পাকিস্তানকে ১৬৯ রানেই আটকে দিয়েছিল টাইগ্রেসরা। এরপর সুপার ওভারে নাহিদা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিং আর ব্যাটিংয়ে সোবানা মোস্তারি ও নিগার সুলতানার জ্যোতির বীরত্বে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে পাকিস্তান। টার্গেট তাড়ায় এদিন শুরু থেকে দেখে শুনে খেলেন ফারজানা ও মুর্শিদা। বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ১২৫ রান। নারী দলের ওয়ানডে ইতিহাসে উদ্বোধনীতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে শুকতারা রহমান ও শারমিন আক্তারের করা ১১৩ রান ছিল সর্বোচ্চ জুটি। 

দলের জয়ের জন্য মাত্র ৪২ রান প্রয়োজন তখন নাশরা সান্ধুর বলে এলবিডব্লিউ হন ফারজানা হক। সাজঘরে ফেরার আগে ১১৩ বলে ৫ চারের মারে খেলেন ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস। নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশিদের মধ্যে আগে থেকেই সর্বোচ্চ রান ছিল ফারজানার। আজকের অর্ধশতক ছিল তার ১০ম। 

প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০ অর্ধশতক ফারজানার, ওয়ানডে ক্রিকেটে একমাত্র সেঞ্চুরিও তার দখলে। 

ফারজানার পর আরেক ওপেনার মুর্শিদাকেও ফেরান নাশরা। মাঠ ছাড়ার আগে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন মুর্শিদা। আগের ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানের ইনিংস ছাপিয়ে ১০৬ বলে ৬ চারের মারে এদিন তিনি করেন ৫৪ রান। এরপর ক্রিজে নেমে নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে বল মোকাবিলার আগেই রান আউট হন ফাহিমা।

এরপর সোবানা মোস্তারিকে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন জ্যোতি। মোস্তারি ৩০ বলে ১৯ আর জ্যোতি ২৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বড় সংগ্রহের আভাস দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু নাহিদাদের স্পিন তোপে বেশিদূর এগোতে পারেনি তারা। উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানকে ৬৫ রান এনে দেন সাদাফ শামাস ও সিদরা আমিন। ৬১ বলে ৩১ রান করা সাদাফ শামাসকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান নাহিদা আক্তার। 

দ্বিতীয় উইকেটে মুনীবা আলির সঙ্গে ২৮ রানের জুটি গড়েন ওপেনার সিদরা আমিন। ৩৬ বলে ১৪ রান করা মুনীবা দলীয় ৯৩ রানে স্বর্ণা আক্তারের শিকার হন।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। দুই ওপেনার সিধরা আমিন ও সাদাফ শামস দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। প্রথম উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০ ওভার পর্যন্ত।

এরপর আর বড় কোনো জুটি গড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ছাড়া বাকি ৮ জনের মধ্যে মাত্র একজন দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছে।

ব্যাটারদের এমন আসা যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন সিধরা। তার অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে ভর করেই ১৬৬ রানের সংগ্রহ গড়ে পাকিস্তান। 

টাইগ্রেসদের পক্ষে ১০ ওভারে ৩ মেডেনে মাত্র ২৬ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন নাহিদা আক্তার। ৩৫ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন রাবেয়া খান।

এএইচ