ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

আফগান সরকারকে দেয়া কূটনৈতিক সমর্থন প্রত্যাহার করছে পাকিস্তান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার

আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে কূটনৈতিক সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান কতৃপক্ষ। 

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তেহরিক-ই-তালিবানে'র ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী হামলা এবং ২০১৪ সালের 'জারব-ই-আজব' অভিযানের পর আফগানিস্তানে আশ্রয় নেওয়া গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জঙ্গি সংগঠনটিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ওবায়েদ-উর-রেহমান নিজামানির নেতৃত্বে পাকিস্তানের কূটনৈতিক কর্মীরা কাবুলে থাকবেন এবং তাদের কূটনৈতিক দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

সূত্রের খবরে বলছে, পাকিস্তান আর আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সক্রিয় কূটনৈতিক সমর্থন দেবে না, যার মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদ। আফগান তালেবান সরকার এবং এর কর্তৃপক্ষ যারা আন্তর্জাতিক সফরের জন্য পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করছে তাদের বিশেষ সুবিধাও প্রত্যাহার করবে পাকিস্তান। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবানের আফগানিস্তান দখলের পর থেকে পাকিস্তান নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং জব্দ করা তহবিলে প্রবেশাধিকারের পক্ষে ছিল।

টিটিপি জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পাকিস্তান বারবার আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তবে টিটিপির সন্ত্রাসী হামলার কোনও হ্রাস ঘটেনি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সর্বশেষ নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি বা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।  এর একদিন আগে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকা আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন,
পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ১৫ জন আফগান নাগরিক এই হামলার সাথে জড়িত বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, টিটিপি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য আফগান মাটি ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী আফগানিস্তানে আমেরিকার অবশিষ্ট সামরিক সরঞ্জাম নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এসব অস্ত্র কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে এবং শুধু পাকিস্তানে নয়, পুরো অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল জুলাইয়ে প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে যে আফগানিস্তানভিত্তিক টিটিপি কেন্দ্রগুলি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইসলামিক আমিরাত কারো বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয় না।