খুনিদের সাথে কেন সংলাপে বসতে হবে: শেখ পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০০ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৩ শনিবার
আজ ১৮ নভেম্বর, সকাল ১০টায়, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি), ৬ষ্ঠ তলা (লিফটের-৬), বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের “আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪” করণীয় শীর্ষক কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন-শেখ ফজলে শামস্ পরশ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
সঞ্চালনা করেন-আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শমাস্ পরশ বলেন, প্রথমে আমি সাধুবাদ জানাই নির্বাচন কমিশনকে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য। আমি মনে করি এই ঘোষণা শুধু একটা সঠিক সিদ্ধান্ত না, একটা সঠিক সিদ্ধান্ত না, একটা সাহসী সিদ্ধান্তও বটে। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পেরেছেন বলে তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের যুবসমাজের খুব দৃঢ়তার সাথে অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ষড়যন্ত্র প্রহিত করেছে। নির্বাচন বাঁনচালের ষড়যন্ত্রও যুবসমাজ প্রতিহত করেছে। একই সাথে আমি সকল গণতন্ত্রকামী মানুষকে অভিনন্দন জানাই নির্বাচনমুখী হওয়ার জন্য। প্রতিযোগিতামূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমাদের কাম্য। শেখ হাসিনার যুবলীগের কর্মীরা প্রতিযোগিতা ভয় পায় না, শর্টকাট ক্ষমতার পথ শেখ হাসিনা খুঁজে নাই কোন দিন। একটা প্রতিযোগিতামূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসবে।
তিনি আরও বলেন, সংলাপের কথা অনেকে বলছে। কার সাথে সংলাপ? খুনিদের সাথে কিসের সংলাপ? খুনিদের সাথে আমরা কেন সংলাপ করবো? যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার পিতা, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, তাদের সাথে আবার কিসের সংলাপ? যারা ১৫ই আগস্ট, ৩রা নভেম্বর, ২১শে আগস্ট করে ক্ষান্ত হয় নাই এখনো আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে যাচ্ছে, তাদের সাথে কোন যুক্তিতে ঐ সকল সমাজের বিবেকরা আমাদের সংলাপ করতে বলে? তিনি বলেন, বিএনপি না এক-দফার দাবি দিয়েছিল? কোথায় গেল তাদের এক দফা? তাছাড়া আমরা মনে করি বিএনপি একটি অবৈধ সংগঠন এবং একটা সন্ত্রাসী সংগঠন যারা মানুষ হত্যা, ক্যু ইত্যাদির রাজনীতি করে। সেকারণে আমরা বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করার দাবি করে আসছি। বিএনপির সৃষ্টি প্রক্রিয়া ও পন্থা দুটোই অবৈধ ছিল। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে সেই হত্যা-ক্যুর মাধ্যমে মিলিটারি অ্যাক্ট ভঙ্গ করে বিএনপি সংগঠন করেছিলেন। তাই বাংলার যুবসমাজ বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি অত্যান্ত প্রাসঙ্গিক, ন্যায়সঙ্গত এবং যৌক্তিক দাবি।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাত ধরেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পরিণত হবে উন্নত রাষ্ট্রে। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদেরকেই রাজপথেই এই সকল অপশক্তি, যারা মানুষ হত্যা করে, যারা খুনি তাদের সায়েস্তা করতে হবে এবং এদেরকে ধরে বিচার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকার আবারো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আনতে আমাদের ২টি কাজ করা একান্ত প্রয়োজন। প্রতিটা মুহূর্তে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে এবং সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখতে হবে এবং নিঃশর্ত ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্য আমাদের সর্বাধিক দরকার। আমি সাংবাদিক ভাইদের প্রতি সমবেদনা জানাই যে তাদের উপরও আক্রমণ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর। হাসপাতালে আক্রমণ করা হয়েছে এবং অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করা হয়েছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পুলিশ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে কারণে এদেরকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আজকের কার্যনির্বাহীর প্রথম সভা। এটার গুরুত্ব আছে। সামনে নির্বাচন এবং বিএনপি-জামাতের তাণ্ডববলীলা চালাতে পারে। সব মিলিয়ে এই সভারগুরুত্ব আছে। বিএনপি-জামাতকে মোকাবিলা করা এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনা এবং নৌকার ভোট বৃদ্ধি করতে যা যা করণীয় তা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে শেখ হাসিনার পাশে থেকে তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি যে উদ্দেশ্যে যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটা পূরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতৃত্বে আসার পর সারা পৃথিবীতে করোনা দেখা দিলো। বাংলাদেশও করোনা দেখা দিল। করোনার প্রকোপে বিশ্ব নেতৃত্ব টালমাটাল সে সময় শেখ হাসিনা শান্ত থেকে সুন্দরভাবে করোনাকে মোকাবিলা করেছেন। আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা খাবার নিয়ে, অক্সিজেন নিয়ে, ঔষধ নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে, ধান কাটার সময় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা কৃষকদের সহায়তা করেছে। বর্ষার সময় পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। শীতের সময় ত্রাণ-বিতরণ করা হয়েছে। ডেঙ্গু নিধণে কাজ করেছে। কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করে সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামাত দেশে অগ্নিসংযোগ করে দেশের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্র হত্যা করে। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনাদের হত্যা করে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে ২৪ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা হত্যা করে। ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলা করেছে। এখন তারা সেই কাজ করে যাচ্ছে। ২৮ নভেম্বর দেখেছেন কিভাবে তারা শান্তি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা করেছে। পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সাংবাদিককে আহত করেছে। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এ কারণে তারা চোরাগুপ্তা হামলা করছে। বাসে আগুন দিচ্ছে। তারা সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ কারণেই সন্ত্রাসী পথ বেঁছে নিয়েছেন। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য সামনে নির্বাচন, সেই নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। যাকে নৌকা দিবে যুবলীগ তার পক্ষে কাজ করবে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, শেখ সোহেল উদ্দিন, ডা. খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মোঃ সোহেল পারভেজ, আবু মনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম মিল্টন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী মোঃ সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আলতাব হোসেনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
কেআই/