তিনবারের নৌকার এমপি রণজিত এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৫২ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ রবিবার
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে পরপর তিনবারের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় এবার নৌকার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন রণজিত কুমার রায়। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন যশোরের অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এনামুল হক বাবুল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৮, ২০১৪ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন রণজিত কুমার রায়। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি পরপর তিনবারের এই সংসদ সদস্য।
এবার তিনি ছাড়াও এই আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বাবুল, বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হোসেন বিশ্বাস, সাবেক উপসচিব সন্তোষ অধিকারী প্রমুখ।
তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাছাই কমিটি চমক এনেছেন এবার তাদের প্রার্থী বাছাইয়ে।
বাঘারপাড়া-অভয়নগর এলাকার বাসিন্দাদের মতে, দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার ক্ষেত্রে রণজিত কুমার রায়ের বিগত কয়েক বছরের নানা কর্মকাণ্ড দায়ী। এই দুই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি কুক্ষিগত করা ছাড়াও যুদ্ধাপরাধী এবং নিজ দলের বাইরের লোকজনকে নানাবিধ সুবিধা প্রদানের বেশ কিছু অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এ কারণে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণার দিন এনামুল হক বাবুলের নাম প্রচার হওয়ায় বাঘারপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা উল্লাস এবং মিষ্টিমুখ করেন।
দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পরপর তিনবারের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়। যদিও তিনি বলছেন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি কিন্তু নৌকার বিপক্ষে ভোট করব না।
তিনি বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে ভালো হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পরও নানা সুবিধা অসুবিধা কিংবা সমস্যা থাকতে পারে। তাছাড়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করারও সুযোগ রয়েছে।
জানতে চাইলে এবারে মনোনয়নপ্রাপ্ত এনামুল হক বাবুল বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও বিভিন্ন দলের মোট সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। যেহেতু তারা সকলে মনোনয়ন কিনেছেন এবং জমা দিয়েছেন প্রত্যেকেই শক্তিশালী, আমার কাছে কেউই দুর্বল নন।
এই আসনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি টেলিভিশনে এই ধরনের একটি সংবাদ আমিও শুনেছি। পরে দলীয় হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, সংবাদটি সঠিক নয়।
প্রসঙ্গত, রণজিত কুমার রায় ২০১৮ সালে বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুবকে প্রায় আড়াই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারান। ২০১৪ সালে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুল ওহাবের চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তারও আগে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুবকে তিন হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২৯৮জন। এ আসনে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৪১ ও নারী ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৮৫৭ জন। এ আসনে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত মোট ভোট কেন্দ্র ১৪৯টি যার মধ্যে ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯৯৮টি।
এএইচ