ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড গঠন (ভিডিও)

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১১:৪৩ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ রবিবার

একাত্তরে নির্বিচারে গণহত্যা এবং অর্থনেতিক বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পাকিস্তানকে। চাইতে হবে ক্ষমাও। বিজয়ের মাসে এ প্রত্যাশা মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হকের। 

সাড়ে সাত কোটি বীর বাঙালির সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনে একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর গঠিত হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড। মানবিক সাহায্যে ভারত এগিয়ে এলে দেশটির সাতটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। শুরু করে স্থল ও আকাশপথে হামলা।

ভারতে হামলার জবাবে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কোলকাতার জনসভায় ঘোষণা দেন, এই যুদ্ধ এখন শুধু বাংলাদেশের একার নয়। যৌথবাহিনী একযোগে পাকিস্তানি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। সীমান্ত এলাকার সাতটি অঞ্চল ঘিরে ফেলেও চালায় আক্রমণ। 

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলে যুদ্ধ শুরু করলো পাকিস্তান আর পূর্বাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ চলছিল মুক্তিবাহিনীর। মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের একটা ক্ষেত্র তৈরি করে দিল পাকিস্তানী বাহিনী। ফলে আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী মিত্র বাহিনী গঠিত হলো ভারতীয় বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী মিলে। তখন এখানে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলো, পাকিস্তানের পরাজয়টা দিন গণনার ব্যাপার হয়ে উঠলো।”

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতায় মূক হয়েছিল বিশ্ববাসীও। ভারতে হামলার সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধ পায় আন্তর্জাতিক রূপ। মুক্তিবাহিনীকে সহায়তায় ফরাসি যুবক ছিনতাই করেন বিমান।

৩ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর আক্রমণের তীব্রতায় পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানি সেনারা। বাংলার রক্তভেজা মাটি আর পোড়া গন্ধ তখন ভারতেরও বিভিন্ন রাজ্যে। 

নির্মম গণহত্যার শিকার বাঙালিরা শুধু প্রাণই হারায়নি। জাতির বৃদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা-চেতনাকে বিনাশের পাশাপাশি অথনীতিকে পঙ্গুও করেছিল পাকিস্তানি হানাদারারা।

মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “কত বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল সেই হিসাবটাও আমাদের করতে হবে। তারা যখনই যেখানে গেছে বাজার পুড়িয়েছে, বাড়ি পুড়িয়েছে, লাইব্রেরি পুড়িয়েছে এবং সেই সঙ্গে তো মানুষ হত্যা ছিলই। সেই সঙ্গে নারী নির্যাতন। এসব মিলে সীমাহীন দুঃখের অথৈ পাথারে আমরা ভেসেছি।”

সেই ক্ষত আজও রয়ে গেলেও ক্ষমা কিংবা ক্ষতিপূরণ দেয়নি পাকিস্তান। অধিকার আদায়সহ সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে সময় এসেছে দেশি দোসরদের সাথে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরও বিচারের। 

মফিদুল হক বলেন, “শুধু ব্যক্তির বিচার তা নয়, এটা তো একটা গোষ্ঠীর ও মতাদর্শের। সেই বিচারটা তো আমাদের করতে হবে। সেখানে যেই দলগুলো এই কাজটা করেছে, ইউরোপে যেমন নাৎসি পার্টি নিষিদ্ধ আমাদের এখানেও সেটা করতে হবে। কাজেই আমরা যখন ডিসেম্বরে স্মরণের মধ্যে যাই, অবশ্যই স্মৃতিটা জাগিয়ে তুলবো কিন্তু স্মৃতির সংগ্রামটা আমাদের পরিচালনা করতে হবে। এটা এখন নতুন প্রজন্মের দায়।”

এএইচ