ভোটের মাঠে নতুন চমক রেকর্ডসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী (ভিডিও)
মানিক শিকদার
প্রকাশিত : ১২:২৪ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ৪শ’ ৪২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কমিশনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলটির অনেকেই স্বতস্ত্র হিসেবে আছেন ভোটের মাঠে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোটের মাঠে নতুন চমক নিয়ে আসতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
৭০ এর নির্বাচনে অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রথম ও শেষ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্টতা পায় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ।
স্বাধীন বাংলাদেশে এ পযর্ন্ত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনেই বড় রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও অংশ নিয়েছেন।
পরিসংখ্যান বলছে ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে ছিলেন ১২০ প্রার্থী, ১৯৭৯তে ৪২২, ৮৬তে ৪৫৩, ৮৮ সালে ২১৪, ১৯৯১ সালে ৪২৪, ছিয়ানব্বইয়ে ২৮৪, ২০০১ সালে ৪৮৬, ২০০৮-এ ১৫১ এবং ২০১৪ সালে ১০৪ জন অংশ নেন।
সবশেষ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৪৯৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতা করেছেন ১২৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এবার অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে। বিএনপি ও সমমনা দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও নিবন্ধিত ৩০টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ২৭১৬ জন প্রার্থী ইসিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র ৭৪৭ প্রার্থীর তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগেরই ৪৪২ জন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেয়ায় প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারি বলেন, “এর আগে আওয়ামী লীগ কিংবা অন্যান্য বড় দলের যারা স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছে তাদের আমরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও দেখেছি। কিন্তু এই প্রথম আমরা দেখলাম যে, নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সেই কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যদি নির্বাচন আরও বেশি বেগবান, আরও বেশি সর্বাত্মক-কর্মচঞ্চল এবং আরও বেশি অর্থপূর্ণ হয়ে উঠে তাহলে সেটাই গ্রহণযোগ্য হবে।”
বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নিলেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে, কারণ বিএনপির স্থলে জনপ্রিয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই ভোটারদের আগ্রহ বাড়াতে পারবে বলে মনে করছেন এই বিশ্লেষক।
অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারি বলেন, “এর মধ্যদিয়ে তারা তাদের জনসম্পৃক্ততা প্রমাণ করবে। স্বতন্ত্রদের অংশগ্রহণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনীতিতে একটা গুণগত পরিবর্তনও নিয়ে আসবে।”
তবে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিছুটা কমবে।
এএইচ