মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের বিবৃতি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৫ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার
বাংলাদেশের ৫২তম মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক আজ এক যুক্ত-বিবৃতিতে পরিষদের সকল স্তরের সদস্য, শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এই শুভেচ্ছা বার্তায় তাঁরা বলেন- “বিশ্বের যেসব দেশে জনগণের বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তাদের প্রায় প্রতিটি দেশেই প্রতিবিপ্লবও ঘটেছে বা প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা হয়েছে। সেই প্রতিবিপ্লবগুলোর কোনোটা সফল হয়েছে, আবার কোনোটা শুরুতেই কিংবা কিছুদিন পর ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা ১৯৭১-এর বিপ্লবের পর মাত্র ৪ বছরের মাথায় প্রতিবিপ্লব নামের মহাবিপর্যয়কে প্রত্যক্ষ করেছি। দীর্ঘ ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন আর পরবর্তী ২৪ বছরের প্রায়-ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাঙ্গালি সুদীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশ তার স্বাধীনতার জন্য এত কষ্ট, এত ত্যাগ স্বীকার ও এত সংখ্যক জীবনদান করেনি। সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে তোলার কাজটি শুরু হয়, সেই সময় সপরিবারে তাঁকে হত্যা করেই জঘণ্য প্রতিবিপ্লবের হোতারা ক্ষান্ত হলো না। তারা দেশটিকে পুনরায় পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি জোরদার করে।
দীর্ঘ ২১টি বছর এই প্রক্রিয়ার পর বঙ্গবন্ধু-কন্যার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশ পরিচালনার চেষ্টা হয়। কিন্তু কুচক্রীরা আবারও প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে আরো ৭ বছর দেশে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পায়। এই দীর্ঘ মোট ২৮ বছরে প্রতিবিপ্লবীরা তাদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করেছে নানাভাবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করা গণমানুষ তাতে সমর্থন না দেয়াতে এখন তারা তাদের কৃত সেই ১৯৭১-এর ধারায় বারবার আগুন সন্ত্রাস, সম্পদ ও মানুষ ধ্বংসের পর এখন যে নতুন বর্বরতা যোগ করেছে, তাহলো রেল লাইন নষ্ট করে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ হত্যা করা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কুশলী হতে দেশে উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন এবং এর মাত্র কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি অংশগুলোও আগামীতে ইনশাল্লাহ তাঁর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লবীরা মানুষকে জিম্মী করে পুনরায় তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্র আরো জোরদার করছে। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লুপ্ত করে একে একটি সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীরাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার অপ-পরিকল্পনাকারী দীর্ঘদিনের এই প্রতিবিপ্লবীদের সাথে সম্প্রতি যোগ হয়েছে বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরাও। অথচ তারা খেয়াল করছে না যে বাংলাদেশ জঙ্গীরাষ্ট্র হলে তারাও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই এবারের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি হতে যাচ্ছে জাতির জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। কিছু ষড়যন্ত্রকারীর প্রতিবিপ্লবী কথাবার্তা, ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড ও মানুষ হত্যার মতো জঘণ্য আচরণে বাংলাদেশের মানুষ বিভ্রান্ত না হয়ে নির্বাচনের দিনে এই আগুন-সন্ত্রাসী ও রেল লাইন তুলে ফেলা খুনি প্রতিবিপ্লবীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে শক্ত অবস্থান গ্রহণ ও নির্বাচনকে সফল করার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।