শতভাগ সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে রেলওয়ে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫৪ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার
ট্রেনে নাশকতা এড়াতে ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়াতে শতভাগ সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রথম পর্যায়ে আন্তনগর ট্রেন, এবং পরবর্তীতে বাকি ট্রেনগুলোও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ট্রেনের সামনে-পেছনে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে থাকবে সিসি ক্যামেরা। প্রথমে যাত্রীদের কাছে যেসব ট্রেনের চাহিদা বেশি সেসব আন্তনগর ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। সে অনুযায়ী প্রাথমিক অবস্থায় প্রাধান্য পাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, গত ১৬ নভেম্বর রাতে টাঙ্গাইল স্টেশনে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের কোচে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় ট্রেনটির দুটি কোচ পুড়ে যায়। ১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়ী স্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনটির দুটি কোচ পুরোপুরি পুড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো একটি কোচ। ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে সিলেট রেলস্টেশনে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কোচে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
১৩ ডিসেম্বর রেলওয়ের ভাওয়াল গাজীপুর এবং রাজেন্দ্রপুর সেকশনে ২০ ফুট রেললাইন কেটে ফেলা হয়। ঐ রেললাইনে দুর্ঘটনায় পড়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনের ইঞ্জিন এবং ছয়টি কোচ লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। এতে এক যাত্রী নিহত ও আহত হন অনেকে। ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার তেজগাঁওয়ে আবারও নাশকতার শিকার হয় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। সেদিন দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান মা-শিশুসহ চারজন, আহত হন আরো ৮ জন। ৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে ৪ যাত্রীর মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, হরতাল-অবরোধে ট্রেনকে ঘিরে নাশকতার ঘটনা ঘটছে। এতে রাষ্টড়ীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের জানমালেরও ক্ষতি হচ্ছে। নাশকতা এড়াতে রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। প্রথমে কয়েকটি ট্রেনে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ট্রেন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।
তিনি আরো বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকলে নাশকতার পাশাপাশি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপও রোধ করা যাবে। কেউ নাশকতা কিংবা পাথর নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটালে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সহজ হবে। প্রথম পর্যায়ে সিসিটিভি মনিটরিং করা হবে রেলওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টার থেকে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতী ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ১২টি করে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোও ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।
ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের এসপি আনোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, হাওর এক্সপ্রেস নামে দুটি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোতেও সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।
তিনি আরো বলেন, শুধু ট্রেনেই নয়, যেসব স্টেশনে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা নেই সেখানেও লাগানো হচ্ছে। ঢাকার রেলস্টেশনগুলো পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে। এটি যেকোনো নাশকতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে তাকে চিহ্নিত করা সহজ হবে।
এমএম//