গাজা যুদ্ধের কারণে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে এক প্রজন্মের শিশু: জাতিসংঘ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:০৪ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ শুক্রবার
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় আল ইসরা ইউনিভার্সিটির ভবনটিও গাজার মানচিত্র থেকে মুছে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার এই ভবনটি উড়িয়ে দিয়েছে। তারা ভবনটিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করেছিল বলে জানা গেছে।
গাজার যুদ্ধ ইতিমধ্যেই অভূতপূর্ব প্রাণহানি ঘটিয়েছে, কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি ভবন ধ্বংসের বিষয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে তার আশঙ্কার কথা বলেছেন। তার মতে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে তরুণদের একটি ‘প্রজন্ম’ হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওচা) যুদ্ধের প্রভাবের ওপর নিয়মিত বুলেটিন প্রকাশ করে।
সংস্থাটির সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ বাড়ি বা আবাসন ইউনিট ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতি ১০টি স্কুলের মধ্যে নয়টির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতাল, পাবলিক বিল্ডিং ও বিদ্যুতের নেটওয়ার্কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যে কোনো সমাজের মতো, গাজার ভবিষ্যৎ তার সন্তান। কিন্তু এখানে তারা চরমভাবে যুদ্ধের শিকার। জাতিসংঘ বলেছে, তাদের এক প্রজন্ম পুরোপুরি হারিয়ে যেতে পারে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের উল্লাস করার ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এক ছবিতে উত্তর গাজায় জাতিসংঘের একটি স্কুল সম্পূর্ণ ধ্বংস হতে দেখা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৩টি কার্যকর। এর মধ্যে অনেকগুলো বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তারা প্রায়শই চিকিৎসা না নিয়েই চলে যায়।
ওচা বুলেটিনে বলা হয়েছে, ক্যান্সার রোগী ও যাদের কিডনি ডায়ালাইসিস বা নব-জন্মের শিশুর মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার প্রয়োজন তারা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের সদস্যসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ডানপন্থী ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হল বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ছেড়ে মিসর বা অন্যান্য আরব দেশে যেতে ‘উৎসাহিত করা’।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ না হওয়া পর্যন্ত গাজায় তার সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে ও হামাস আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি নয়।
ইসরায়েলি সরকারের নীতি হল, শেষ পর্যন্ত কোন ইসরায়েলি গাজায় থাকবে না। কিন্তু যেদিন যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে সেই দিন ভূখণ্ডের কী অবশিষ্ট থাকবে?
কেআই//