ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

নারীদের জন্য দুটি বিশেষায়িত বন্ড আনছে বিএসইসি

তৌহিদুর রহমান

প্রকাশিত : ১১:২৪ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার

অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের সুযোগ সম্প্রসারণে নারীদের উদ্যোক্তাদের জন্য ‘অরেঞ্জ ও পিংক’ নামে দুটি বিশেষায়িত বন্ড আনছে যাচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। শিগগিরই নতুন এ বন্ড আসতে পারে। যেসব কোম্পানির বোর্ডে নারীর অগ্রাধিকার থাকবে এবং নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে, সেসব প্রতিষ্ঠান এই বন্ডের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে। 

অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে এসব বন্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বিশ্বব্যাপী দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগে বড় ভূমিকা রাখে পুঁজিবাজার। তবে বাংলাদেশে তা ব্যতিক্রম। এখানে প্রায় সব বিনিয়োগের জন্য মূলধন সংগ্রহে ব্যাংকের কাছে ধর্না দেন সব পর্যায়ের উদ্যোক্তারা।

এতে ব্যাংকের ওপর চাপ বেড়ে যায়। স্বল্প মেয়াদী ঋণে বাড়ে ব্যবসার খরচ। আবার ব্যাংকের বিভিন্ন শর্ত পুরণ করতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই ছোট এবং নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতেও আগ্রহী হয় না ব্যাংকগুলো।  

এতে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয় নারী উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের সুযোগ। সম্ভাবনা সত্ত্বেও ঝরে পড়েন অনেক উদ্যোক্তা।

এসব বিবেচনায় নারীদের উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের পথ সুগম করতে বিশেষায়িত বন্ড আনছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও তাদের সক্ষমতা বাড়াতে শিগগিরই বাজারে আসছে এই অরেঞ্জ বন্ড। 

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, “দুইরকম বৈশিষ্ট্যের বন্ড দুটি। এর মাধ্যমে একজনকে ছোট থেকে তৈরি করা হবে, আরেকজনকে পরিণত করা হবে। আইনগুলো হয়ে গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে গেজেট হয়ে যাবে। তা হয়ে গেলেই এটা আইনে রূপান্তরিত হবে, তখন ‘অরেঞ্জ ও পিংক’ বন্ড নারী উদ্যোক্তাদের অফার করা যাবে।”

নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট মাত্রার মুনাফা এই বন্ডকে জনপ্রিয় করবে বলে আশা বিএসইসির। ইতিমধ্যেই অরেঞ্জ বন্ডের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। 

বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমদ বলেন, “কিছু সুনির্দিষ্ট জিনিস এখানে সংযোজন করা দেয়া হবে। বন্ড থেকে যে টাকাটা উত্তোলন করা হবে সেটি কেবলমাত্র নারীদের জন্য। যে অর্থায়নটা হবে সেটা যাতে কোনোভাবেই পরিবেশ দূষণ না করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সেই আইনও সংযোজন করা হয়েছে।”

দেশে বন্ড মার্কেট খুব একটা জনপ্রিয় নয় মন্তব্য করে বিশ্লেষকরা নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য নতুন বন্ডকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী এবং নারী উদ্যোক্তা উভয়ই উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন তারা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মূসা বলেন, “বন্ড সেক্টরটা অনেক দিন ধরে ঝিমিয়ে চলছে, ভালোভাবে চলছেনা। ওইটার মধ্যে যদি কোনো সিকিউরিটজ নেয়া যায় যেমন এই নতুন বন্ডগুলো। তাহলে ইনভেস্টরদের জন্য সুযোগ বেড়ে যাবে।”

বন্ড মার্কেট বিকশিত হলে দেশের পুঁজিবাজার আরও সমৃদ্ধ হবে, বাড়বে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও- এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

এএইচ