বাণিজ্য মেলার মূল আকর্ষণ ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ি’
মোঃ নুর আলম, রূপগঞ্জ থেকে
প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার
পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মূল আকর্ষণ ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ি’। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ-সোনার বাংলা বিনির্মাণে জাতির পিতার অবদান ও ভাবনা নিয়ে অর্থপূর্ণভাবে নির্মাণ করা হয়েছে প্যাভিলিয়নটি।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) পূর্বাচলের ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ ঘুরে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু টানেলের আদলে নির্মিত প্রবেশ পথ দিয়ে মূল এক্সিবিশন সেন্টারে ঢুকতেই চোখে পড়বে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। যা তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডস্থ বঙ্গবন্ধুর বাড়ির আদলে।
দোতলা বাড়িতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ছবি রচিত গ্রন্থ ও কর্মকাণ্ডের ইতিহাস দিয়ে।
উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে জাতির পিতার অবদান ও ভাবনা, দেশের উন্নয়ন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতা সংগ্রাম ইত্যাদিকে প্রক্ষেপণ করে এবারের বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নকে অধিকতর নান্দনিক, ভাবগাম্ভীর্য ও অর্থপূর্ণভাবে নির্মাণ করা হয়েছে।
যেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও আদর্শের বিভিন্ন দিক ছাড়াও যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নেওয়ার প্রকৃত ইতিহাস। সকলের কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরারও প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও তার সম্পর্কিত পুস্তকাদি এবং তার জীবন ও কর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ জানুয়ারি ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার শুভ উদ্বোধন করেন।
এবারের বাণিজ্য মেলার লে-আউট প্ল্যান (সংশোধিত) অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৩৫১টি এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টল বরাদ্দ পেয়েছে।
অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩০০ বর্গফুট আয়তনের দুটি হলে (এ ও বি) ১৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সেন্টারের প্রধান ফটকের পূর্বপাশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি। হলের পেছনে ফরেন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন এবং প্রিমিয়ার ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৫৩টি।
সেন্টারের মূল কম্পাউন্ডের বাইরে ৬ একর জমির একাংশে ফুড জোন (৩২টি রেস্তোরাঁ ও মিনি রেস্তোরাঁ) এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং মেলায় আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র্যাব নিয়োজিত আছে। এছাড়া সার্ভিস গেট ও ভিআইপি গেটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশ গেট, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সকল এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, মেলার প্রবেশ গেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
একইভাবে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে মেলায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত ফায়ার ব্রিগেড।
সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী সচিবালয়। দর্শনার্থীদের সকল প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য রয়েছে একটি তথ্য কেন্দ্র। ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকছে একাধিক বুথ।
মেলায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে। মা ও শিশুদের কথা বিবেচনা করে মেলায় স্থাপন করা হয়েছে দুটি মা ও শিশু কেন্দ্র। অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার মধ্যে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ, নিউট্রিশন অ্যান্ড অটিজম সেবা, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার বেঞ্চ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় মাসব্যাপী সকাল ১০টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে।
এএইচ