ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আয়ে রেকর্ড, নতুন গ্রাহক বৃদ্ধি ও ফোরজি সেবায় শীর্ষস্থানে রবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৯ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার

দেশব্যাপী বিস্তৃত শক্তিশালী নেটওয়ার্কে গ্রাহকের আস্থায় ২০২৩ সালে রেকর্ড আয় করেছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফোরজি সেবায়ও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অপারেটরটি।

আজ বৃহস্পতিবার ২০২৩ সালের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করে এসব তথ্য জানায় রবি । ধারাবাহিক বিনিয়োগের ফলে একদিকে রবি'র নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি ও ডেটা ক্যাপাসিটি বেড়েছে। একই সাথে ভিডিও স্ট্রিমিং এর ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে অপারেটরটি। রবি নেটওয়ার্কে কলড্রপের হার বর্তমানে শূণ্য দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে যা কলড্রপের স্বীকৃত মানদন্ডের অনেক নিচে। এসবের প্রতিফলনে ২০২৩ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সমস্ত টেলিকম অপারেটরদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থান অজন করে রবি। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ২ হাজার ৫১১ দশমিক ২ কোটি টাকাসহ বছর শেষে রবির মোট আয় ৯ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। যা রবি'র ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এছাড়া, ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ১৪৮ দশমিক ৬ কোটি টাকা কর পরবর্তী (পিএটি) মুনাফাসহ ৩২১ কোটি টাকা পিএটি নিয়ে বছর শেষ করেছে রবি। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে রবির আয় বৃদ্ধির হার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০২৩ সালের একই প্রান্তিকে রবির আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে ভয়েস সেবায় রবির আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ শতাংশ । অন্যদিকে ডাটা সেবায় ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আয় বেড়েছে ২৮ দশিমক ২ শতাংশ এবং ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০২৩ সালের একই প্রান্তিকে ডাটা সেবায় আয় বেড়েছে ৩১ শতাংশ। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ৫৫০ কোটি টাকা মূলধনী বিনিয়োগসহ বছর শেষে রবির মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকায়। মোট গ্রাহকের ৬১ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে ২০২৩ সালেও ফোরজি সেবায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রবি। ২০২৩ সালে রবির মোট গ্রাহকের ৭৬ শতাংশের বেশি গ্রাহকই ছিলেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, যা এ খাতে সর্বোচ্চ। ২০২৩ সাল শেষে রবি ১৬ হাজার ৮০০+ ফোরজি সাইট দিয়ে ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ দেশের জনগণের জন্য ফোরজি কভারেজ নিশ্চিত করেছে। ৪৩ লাখ নতুন গ্রাহক যোগ হওয়ার মধ্য দিয়ে রবির গ্রাহক সংখ্যা ২০২৩ সালে ৫ কোটি ৮৭ লাখে পৌঁছেছে, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩১ শতাংশ। ২০২৩ সালে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে রবি।

একইসাথে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৪৭ লাখে পৌঁছেছে এবং রবির ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৫৭ লাখে পৌঁছেছে। রবি'র কলড্রপের হার আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) স্বীকৃত কলড্রপের অনেক নিচে যা মাত্র শূণ্য দশমিক ২ শতাংশ। এর মাধ্যমে রবি গ্রাহকের আস্থার নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ইবিএআটিডিএ ছিল (৫১ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিনসহ) ১ হাজার ২৯২ দশমিক ২ কোটি টাকা যা ২০২৩ সালে (৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ মার্জিনসহ) ৪ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, ২০২২ সালের তুলনায় এটি ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ১ হাজার ৫০৯ দশমিক ৪ কোটি টাকাসহ ওই বছর রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে মোট ৫ হাজার ৬৬১ দশমিক ২ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে মোট আয়ের ৬০ শতাংশ এবং পুরো বছরে আয়ের প্রায় ৫৭ শতাংশ সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছে রবি। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দশমিক ২৮ টাকা এবং পুরো বছরের ইপিএস দশমিক ৬১ টাকা। রবির পরিচালনা পর্ষদ ১০% হারে নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে (অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ১.০০ টাকা) যা ২০২৩-সালের পিএটি-এর ১৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রবি’র ২৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা আগামী ২৪ এপ্রিল ২০২৪ এ অনুষ্ঠিত হবে।

রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও রাজীব শেঠি বলেন,“২০২৩ সালে রবির রেকর্ড আয়ের মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে আমাদের নেটওয়ার্কের উপর গ্রাহকদের পূর্ণ আস্থা। নেটওয়ার্কের উপর এই আস্থা ২০২৩ সালে টেলিকম খাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রাহককে রবিতে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। যখন আপনি বিবেচনায় নিবেন যে রবির ডাটা অভিজ্ঞতা ১৩০% এবং ভয়েস অভিজ্ঞতা ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে ২০২৩ সালে, তখন আর বুঝতে কষ্ট হয়না যে আমাদের ব্যবসায়িক সাফল্য গ্রাহকদের পক্ষ থেকে আমাদের সেবার মানের একটি অনন্য স্বীকৃতি। এছাড়া, ৪জি সেবায় আমাদের অব্যাহত নেতৃত্ব এটাই প্রমান করে যে বাজারে ডিজিটালাইজেশনের যুদ্ধে রবি জয়ী হচ্ছে।

“ রাজীব শেঠি বলেন,“এখাতে সামগ্রিক নীতিমালা ও বিভিন্ন প্রক্রিয়া স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্রুত উদ্যোগ নিলে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ধারায় বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। এছাড়া এখাতে এমন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না যার ফলে একটি অপারেটর বিশেষ সুবিধা পেয়ে সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশে প্রভাব পড়ে।"

কেআই//