ছাত্র রাজনীতি রুটি রোজগারের ফন্দি-ফিকির নয়: সাদ্দাম হোসেন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৫৯ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রবিবার
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি মানে ক্ষমতার দাপট, বাহাদুরি, ব্যক্তিগত রুটিরোজগার বাড়ানোর জন্য ফন্দি ফিকির নয়।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম মাঠে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার কর্মি সভায় এসব বলেন তিনি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেন সাধারণ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা জানবে ছাত্রলীগ মানে তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু একটি সংগঠন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ব্যক্তিত্ব থাকবে দৃঢ়, তারা হবে সৎ। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বিনয়ী আচরণ করবে। ভালোবাসা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হৃদয় জয় করবে। সেরকম ছাত্রলীগ আমরা দেখতে চাই।
তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি মানে শিক্ষার্থীদের কাছে আইকোন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবেন। আপনাদের মেধা, কমিউনিটির দক্ষতা, সামাজিক সাংস্কৃতিক গুণাবলী ও মানবিক গুণাবলীর কারণে শিক্ষার্থীরা আপনাদের অনুসরণ করবে। সেই লক্ষ্যে এই কর্মি সভা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, কর্মিসভা করা শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বা একটি কমিটি গঠন করা নয়। ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন ও একজন কর্মী হওয়া মানে একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনা করার সক্ষমতা অর্জন করা। আমরা ঠাকুরগাঁওয়ের তারুণ্যের কাছে এটি চাই। ছাত্র রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও আমরা ছাত্রলীগকে সেরকম শক্তিশালী করতে পারিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে হবে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর ভর করেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। ছাত্রলীগের যে স্বাতন্ত্র সক্রিয়তা রয়েছ; সেই সক্রিয়তা ও সংগঠনের নিজস্ব শক্তি সেটি নেতাকর্মীদের বজায় রাখার মতো ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
স্মৃতিচারণ করে সাদ্দাম বলেন, আমার বাড়ি পঞ্চগড় হলেও ঠাকুরগাঁও আমার সেকেন্ড হোমটাউন। এখানে আমি বড় হয়েছি। এই শহরটি আমাকে ভালোবাসতে, সৃজনশীলতার শক্তিতে উজ্জীবিত হওয়ার পথ দেখিয়েছে। রাজনৈতিক গুণাবলি অর্জন করা, নেত্রীত্ব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করা ও মুক্তিযুদ্ধকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবাসা শিখিয়েছে। জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হওয়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁও শহরের মাটি আলোবাতাস ও ধুলিকণা কোন না কোনভাবে আমার পথ চলায় ভূমিকা রেখেছে। সেকারণে ঠাকুরগাঁও শহরের কাছে আমরা আজন্মের ঋণ আছে। এখানে একটি মডেল আদর্শ ছাত্রলীগ তৈরি করার মাধ্যমে ও তরুণ প্রজন্মকে আলোকিত হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে সেই ঋণের কিছুটা হলেও পরিশোধ করার চেষ্টা আমি সারাজীবন করে যাবো।
সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসে। লাখো শহীদের রক্তের চেতনায় নিজেকে গড়ে তুলে। সবাই যেন জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে নিজেকে গড়ে তুলে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখাকে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ঠাকুরগাঁও- ২ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান বাবলু, সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় বক্তব্য রাখেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি সানোয়ার পারভেজ পুলকসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেত্রীবৃন্দ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেবশীষ দত্ত সমীরসহ জেলা ছাত্রীলীগের বিভিন্ন নেত্রীবৃন্দ ও কর্মীরা।
এএইচ