ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ফরিদুর রেজা সাগর: বাংলা ভাষায় টেলিভিশন মাধ্যমের বাণিজ্যিক উৎকর্ষতার পথিকৃৎ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৯ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার | আপডেট: ১১:০১ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার

ফরিদুর রেজা সাগর। বৈচিত্র্যময় পরিচয়ে বর্ণিল ব্যক্তিত্ব। উপন্যাসিক রাবেয়া খাতুনের ছেলে, শিশু সাহিত্যিক, বাংলা ভাষার সবচেয়ে বেশি সিনেমার প্রযোজক, বাংলা ভাষার টেলিভিশনে অসংখ্য নতুন ধরনের অনুষ্ঠান নির্মানের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা এবং সফল ব্যবসায়ী। এ সকল পরিচয় যে মাধ্যমে একসাথে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়েছে তার নাম টেলিভিশন। বাংলা ভাষার বেসরকারি টেলিভিশনকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করার মাধ্যমে টেকসই করতে তিনি যে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিয়েছেন এক কথায় অনন্য। ফরিদুর রেজা সাগরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল "চ্যানেল আই" যাত্রা শুরু করে ১৯৯৯ সালে। এই চ্যানেলের যাত্রা শুরুর পূর্বে বাংলাদেশের মানুষ টেলিভিশন বলতে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও সদ্য চালু হওয়া এটিএন বাংলাকে বুঝত। টেলিভিশন আয়ের একমাত্র উৎস ছিল বিজ্ঞাপন।

টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি আয় বাড়াতে- বিষয়ে বৈচিত্রে এত ধরনের বাণিজ্যিক আঙ্গিক ব্যবহার করা যায় ফরিদুর রেজা সাগরের পূর্বে কেউ ভাবেননি। বর্তমানে টেলিভিশনে পপ আপ, ডগি, ক্লক, স্ক্রল, সিজিসহ নানা ধরনের বিজ্ঞাপন কাঠামোর ধারণা, টেলিভিশন কাঠামোতে ইভেন্ট আয়োজন সবই সাগরের সৃষ্টিশীলতার চমক। বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনের কনজিউমারিজম বা কমোডিফিকেশন নিয়ে আলোচনা সমালোচনা আছে। ফরিদুর রেজা সাগরের সৃষ্টিশীল বাণিজ্যিক ভাবনাও আলোচনা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। তবে সত্যিটুকু হলো বাংলাদেশের কোন টেলিভিশন উদ্যোক্তা তাঁর ধারণাগুলোকে উপেক্ষা করতে পারেননি। বাংলাদেশে চলমান প্রতিটি টিভি চ্যানেল স্ক্রিন তার প্রমান। সাগরের দেখানো পথেই প্রতিটি চ্যানেল নিজেদের বাণিজ্যিকভাবে টিকিয়ে রেখেছে।

পুরো টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক রূপরেখায় সাগরের সৃষ্টিশীল অবকাঠামোর উপরে দাঁড়িয়ে নিজের অস্তিত্বকে টেকসই করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবে দৃশ্যমান মাধ্যমে দ্রুত গতির পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে টেলিভিশন মাধ্যমে। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে কনটেন্ট বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও সাগর মডেলই এখন পর্যন্ত অগ্রগণ্য। এ কারনে নিঃসন্দেহে বলা যায়, ফরিদর রেজা সাগর বাংলা ভাষার টেলিভিশন মাধ্যমের ব্র্যান্ড ও বিজ্ঞাপন অবকাঠামোর টেকসই বিনির্মাণের পথিকৃৎ। বাংলাদেশী এই অনন্য টেলিভিশন ব্যক্তিত্বের জন্মদিনে শুভ কামনা।

লেখক: গবেষক ও সাংবাদিক।