আবারও দগ্ধ রাজধানী, প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় অর্ধশত
তানভীর সুমন
প্রকাশিত : ০২:১০ পিএম, ১ মার্চ ২০২৪ শুক্রবার
গত রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুড়ে যায় পুরো ভবনটি। ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪৬ জন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান। আর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুক সাংবাদিকদের জানান, এই অগ্নিকাণ্ডে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আরও একজন মারা গেছেন। বর্তমানে মোট মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪৬ জন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয় ৪২ জনকে। তাদের মধ্যে চার শিশু ও ২১ নারী ছিলেন। বাকিরা পুরুষ । ভবনটি থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ভবনটিতে তল্লাশি চালান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। রাত আড়াইটা নাগাদ তারা ভবনটি ছেড়ে যান। এরপর ভবনটির সামনে বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা। ভবনটির সামনে বহু সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েনের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থলে একাধিক অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছিলো।
উপস্থিত ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, তল্লাশি শেষে সিলগালা করা হয়েছে ভবনটি। এখন ভবনটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া) শাজাহান সিকদার।
তবে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, রেস্টুরেন্টগুলোর প্রতিটিতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা আর ভয়াবহ হয়েছে।
অধিবর্ষের (লিপ ইয়ার) বিশেষ এই দিনে, রাতের নগরী পরিণত হয়েছে বিষাদের নগরীতে। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকার এই ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে ছিল খাবার ও কাপড়ের দোকান । প্রতিদিন সন্ধ্যায় ক্রেতা ও ভোজন রসিকদের ভিড় লেগেই থাকতো এই ভবনটিতে। এ দিলেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অনেকেই পরিবার নিয়ে, খেতে বা কেনাকাটা করতে এসেছিলো রাজধানীর এই বহুতল ভবনটিতে। তাদের মধ্যে এখন অনেকেই লাশ হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালে মর্গে। হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পোড়া লাশের গন্ধ; স্বজনদের আহাজারিতে স্তব্ধ রাতের রাজধানী। কেউ জানেনা এর শেষ কোথায়। প্রতিনিয়ত রাজধানীতে ঘটে চলেছে এমন অগ্নিকাণ্ড। যেন মৃত্যুপুরীতে আমাদের বসবাস।