ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

৩ মার্চ মুক্তিসংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা, ইশতেহার পাঠ (ভিডিও)

মফিউর রহমান

প্রকাশিত : ১২:০৭ পিএম, ৩ মার্চ ২০২৪ রবিবার | আপডেট: ১২:০৯ পিএম, ৩ মার্চ ২০২৪ রবিবার

পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করায় পূর্ব পাকিস্তান তখন অগ্নিগর্ভ। একাত্তরের ৩রা মার্চ ঘোষিত হয় বাঙালির চূড়ান্ত মুক্তিসংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা। পাঠ করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। এতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা, জাতীয় সংগীত, জাতির পিতা এবং জাতীয় স্লোগান ঠিক করা হয়। 

‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠাৎ বাংলাদেশ/কেঁপে কেঁপে উঠে পদ্মার উচ্ছ্বাসে। সে কোলাহলে রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ/ জলে ও মাটিতে ভাঙনের বেগ আসে।’

ব্রিটিশ আমল থেকেই নানা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বাংলাদেশ নামটির উদ্ভব। এটি শুধু একটি শব্দ বা একখণ্ড ভূমি নয়। বরং বাঙালি জাতির হাজার বছরের আবেগ-ভালোবাসায় মেশা দুর্দমনীয় বীরত্ব আর জাগ্রত চেতনা। 

এরই পথ ধরে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন-ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থানের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ যাত্রা। 

উত্তাল মার্চের প্রথম দিন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে চলছে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও দুর্বার সংগ্রাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বন্দরে পৌঁছানোর পথরেখায় হাঁটছে মুক্তিকামী বাঙালি। 

৩রা মার্চ সর্বাত্মক হরতালে সমগ্র বাংলাদেশে জীবনযাত্রা স্তব্ধপ্রায়। পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র জনসভায় এলেন বঙ্গবন্ধু। ডাক দিলেন অসহযোগ আন্দোলনের।

সভায় সংগ্রামের নিউক্লিয়াস চার ছাত্রনেতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ নিলেন হাজারো ছাত্রনেতা। নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করলেন শাহজাহান সিরাজ। 

ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ও জাতির পিতা ঘোষিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি।  ঠিক হয়, বাংলাদেশের পতাকা হবে সবুজ জমিনের মাঝে লাল সূর্য, মাঝে সোনালী মানচিত্র।

কারফিউ দিয়ে সারাদেশে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে গুলি চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। প্রাণ যায় শতাধিক মানুষের। বীরের এ রক্তস্রোতই বিপ্লবে-বিদ্রোহে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে চলে মুক্তির চূড়ান্ত পথে।  

বাঙালির এ সাহসের কথা আগেই বুঝেছিলেন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য। তাইতো তিনি লিখেছেন: ‘সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়ঃ জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়’।

এএইচ