বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে এদেশের জনগণের ওপর অত্যাচার করা: শেখ পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ০৪:৩৯ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার
আজ ২৫ মার্চ, সকাল ১০টায়, পল্লবী, বাউনিয়াবাদ ঈদগা মাঠে ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে গরীব ও অসহায় রোজাদারদের মাঝে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-শেখ ফজলে শামস্ পরশ-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
সভাপতিত্ব করেন-মজিবুর রহমান বাবুল, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর। সঞ্চালনা করেন-মোঃ ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-সভ্যতার ইতিহাসের ভয়ঙ্কর একটা রাত ২৫ শে মার্চের কালোরাত। শুধু ১৯৭১ এর এই ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালিকে বিনা বিচারে হত্যা করেছিল পাকিস্তান হানাদার বাহিনী-যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। সেই থেকে আত্মরক্ষার স্বার্থে শুরু হয় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আর ওই দিনের হত্যাকা-ের সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিল আমাদের দেশেরই রাজাকারদের দল। নিজের পরিবার, প্রতিবেশী অথবা নিজ দেশের নাগরিকের উপর পরিকল্পিতভাবে এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে মানুষ হিসাবে ওরা সমগ্র জাতিকে কলঙ্কিত করেছে, ছোট করেছে।
বাঙালি জাতিকে যে বিলুপ্ত করে দেবার জন্যই এই গণহত্যা চালানো হয়েছিল এব্যাপারে সন্দেহ নাই। তিনি বলেন-আমাদের সৌভাগ্য আমাদের দেশে জন্মেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, যার অপ্রতিরোধ্য প্রতিবাদ ও সাহসী সংগ্রামের ফলে আমরা আমাদের এদেশের মানুষকে ঐ সকল হায়েনাদের গ্রাস থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন-জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোন সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেয় নাই। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া স্বীকৃত এবং স্বঘোষিত খুনিদের নাগরিকত্ব, মন্ত্রীত্ব সবই দিয়েছে। আজকে যে দল গণতন্ত্রের জন্য কান্না-কাটি করে তারা নিজেরাইতো হত্যাকারীদেরকে প্রশ্রয় বা সমর্থন দিয়েছে। আর আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্মেছিলেন বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে। শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন-আজকে অনেকে গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলছে।
তাদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্ন, ১৯৭১ সালে যখন রাজাকার, আলবদর, আল-সামস বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে, ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্বিচারে হত্যা ও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তখন এই সকল গণতন্ত্রকামীদের ভূমিকা কি ছিল? এমনকি ২০০১ সালেও ঐ জামাত-বিএনপি সরকার যখন সেই পাকিস্তানী কায়দায় আমাদের সংখ্যালঘু ভোটারদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে তাদেরকে উৎখাত করেছিল, তখনো কি এই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ধারক এবং বাহকেরা প্রশ্ন তুলেছিলেন? বাংলাদেশে প্রায় এক যুগের বেশি সময় যে অগণতান্ত্রিক মিলিটারি শাসকদের দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছিল, সেই মিলিটারি শাসকদের ছত্রছায়ায় যে দল গঠিত হয়ে রেফেরেন্দামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে তারা এখন ভোটাধিকারের কথা বলে! ১৫ই আগস্টে যখন নারী-শিশু হত্যা করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে তাদের কোন প্রতিক্রিয়া ছিল? আসলে বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছে এদেশের দুঃখী-দরিদ্র, বঞ্চিত মানুষদের আরও বঞ্চিত করেছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এটা তাদের বদলা। বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে এদেশের জনগণের ওপর অত্যাচার করা ও বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন-জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সবধরণের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে আসার সুযোগ করে দিয়েছিল। ভারতের পণ্য বর্জনের ঘোষণা, যারা দিয়েছে তারা যেন রোজার সময় চিনি, চিনির তৈরি মিষ্টি, গম, গম থেকে তৈরি করা আটা ময়দার কোন খাদ্য, পেঁয়াজ, গরম মসলা, জিরা, যা যা ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য এই দেশে আসে, বাসমতি চালসহ এগুলি যেন ভারতের পণ্য বলে বর্জনকারীরা না খায়। সকলের বৌ দের কাছে যত ভারতীয় শাড়ি কাপড় আছে সব কি পুড়িয়ে দেবে? যেহেতু বিএনপির নেতারা দোকান থেকে গরম চাদর কিনে পুড়িয়েছে তখন যার ঘরে যত ভারতীয় শাড়ি গরম কাপড় ইত্যাদি আছে সবই তো তাদের পুড়িয়ে ফেলা উচিত তাই না?
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল পারভেজ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কেআই//